Online fraud

নামী ব্যাঙ্কের ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলে প্রতারণা, লক্ষাধিক টাকা হারালেন যুবক, কলকাতায় ধৃত চার, জড়িত জামতাড়া গ্যাং!

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, অভিযুক্তেরা প্রতারণার টাকায় দামি বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম কিনতেন। তার পরে সেই সরঞ্জাম কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৫ ১৪:০৬
Share:

প্রতারণার ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।

বেসরকারি ব্যাঙ্কের ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলে প্রতারণা। সেই ফাঁদে পা দিয়ে প্রায় এক লক্ষ টাকা হারালেন কলকাতার গার্ডেনরিচের এক যুবক। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে খাস কলকাতা থেকে চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা জানতে পেরেছে, এই প্রতারণাচক্র কলকাতার পাশাপাশি জামতাড়াতেও সক্রিয়। ঝাড়খণ্ডের এই জামতাড়ায় সক্রিয় বহু প্রতারণাচক্র। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, প্রতারণার টাকায় বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম কিনে তা কলকাতায় বিক্রি করতেন অভিযুক্তেরা।

Advertisement

গত ১৮ জুলাই গার্ডেনরিচ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সন্দীপকুমার আগরওয়াল নামে এক যুবক। তাঁর বয়স ৩২ বছর। তিনি গার্ডেনরিচের আলিফ নগরের বাসিন্দা। অভিযোগে তিনি জানান, গত ১১ জুলাই তিনি প্রতারণার শিকার হন। তাঁর থেকে হাতানো হয়েছিল এক লক্ষ ১৮ হাজার ৪১০ টাকা। কী ভাবে? সন্দীপের অভিযোগ, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলেছিলেন অভিযুক্তেরা। সেখানে গ্রাহকদের সাহায্য করার জন্য একটি নম্বরও দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সেই নম্বরে ফোন করেছিলেন সন্দীপ। ফোনের অন্য দিকে থাকা ব্যক্তি দাবি করেছিলেন, তিনি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ম্যানেজার। এর পর অভিযুক্ত সন্দীপের হোয়াটসঅ্যাপে একটি লিঙ্ক পাঠান। ওই লিঙ্কে ক্লিক করে তাঁকে অভিযোগ জানাতে বলা হয়। সন্দীপ লিঙ্কে ক্লিক করতেই তাঁর মোবাইল হ্যাক করা হয় বলে অভিযোগ।

পুলিশকে সন্দীপ জানিয়েছেন, তাঁর মোবাইল হ্যাক করে অ্যাকাউন্ট থেকে পর পর কয়েকটি লেনদেনের (ট্রানজ়াকশন) মাধ্যমে এক লক্ষ ১৮ হাজার ৪১০ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়। তার নেতৃত্বে ছিলেন অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (ডিসি বন্দর) মেহতাব আলম এবং গার্ডেনরিচ থানার অতিরিক্ত ওসি নাদিম আখতার। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, অভিযুক্তেরা প্রতারণার টাকায় দামি বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম কিনতেন। তার পরে সেই সরঞ্জাম কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতেন। কলকাতার পাশাপাশি অভিযুক্তদের গোষ্ঠী জামতাড়াতেও সক্রিয়। প্রসঙ্গত, এই জামতাড়ায় বসে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজনকে ফাঁদে ফেলে টাকা হাতানোর অভিযোগ রয়েছে।

Advertisement

শহরের বিভিন্ন জায়গায় শনিবার রাতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তার পরেই চার জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতেরা হলেন ২৬ বছরের মহম্মদ আরিফ খান, ২৮ বছরের রাজা হাতি, ২১ বছরের মহম্মদ আহসান আলি, ২৪ বছরের বিকাশ কুমার। আরিফ, রাজা, আহসানকে লেকটাউন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা তিন জনেই কলকাতার বাসিন্দা। বিকাশকে পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আদতে ঝাড়খণ্ডের দুমকার বাসিন্দা। তল্লাশি চালিয়ে ৩৯টি মোবাইল, আটটি পাওয়ার ব্যাঙ্ক, তিনটি সিল করা হাতঘড়ি, একটি ট্যাব, দু’টি সিল করা ব্লুটুথ স্পিকার, একটি সিল করা হেডফোন, একটি স্কুটি এবং নগদ আড়াই লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজেয়াপ্ত করা জিনিসের মূল্য ১৫ থেকে ১৭ লক্ষ টাকা। ধৃতদের রবিবার আদালতে হাজির করানো হয়েছে। ২ অগস্ট পর্যন্ত তাঁদের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না, কী ভাবে টাকা লেনদেন হত, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement