পাশাপাশি ভাড়াবাড়িতে একসঙ্গে থাকত অনেকগুলি পরিবার। কিন্তু ওই দম্পতি কারও সঙ্গে মিশতেন না। কোনও আত্মীয়স্বজনকেও তাঁদের বাড়িতে আসতে দেখা যেত না। মঙ্গলবার সকালে সেই নিঃসন্তান দম্পতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল হাওড়ার নাজিরগঞ্জ থানার বিবেকানন্দ কলোনিতে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ওই দম্পতির নাম জহর চক্রবর্তী (৬০) এবং রমা চক্রবর্তী (৫২)। বছর দেড়েক আগে ওই এলাকারই অন্য একটি ভাড়াবাড়ি ছেড়ে তাঁরা বিবেকানন্দ কলোনির ওই বাড়িতে ভাড়া এসেছিলেন। জহরবাবু স্থানীয় এক বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। পুলিশ জানায়, সকালে বাড়ির মালিকই প্রথম দেখেন জানলার লোহার গ্রিলের সঙ্গে গামছা ও ওড়না গলায় পেঁচানো অবস্থায় ঝুলছেন ওই দম্পতি। এই দৃশ্য দেখেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ওই দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, আর্থিক অনটন ও মানসিক অবসাদের কারণে ওই দম্পতি আত্মহত্যা করতে পারেন। তবে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। প্রতিবেশীদের দাবি, তাঁরা ওই দম্পতিকে নিজেদের মধ্যে খুব একটা ঝগড়া করতে দেখেননি। তাঁদের অনুমান, নিঃসন্তান হওয়ার কারণে ওই দম্পতি মানসিক অবসাদে ভুগতেন। আর সে কারণেই কারও সঙ্গে মিশতেন না।
এ দিন বাড়ির মালিক লক্ষ্মীকান্ত মাইতি বলেন, ‘‘সকালবেলা উঠেই ঘরের বাইরে থেকে জহরবাবুর দেহ দেখতে পাই। পাশে তাঁর স্ত্রীর দেহ ঝুলছিল। বেশ কিছু দিন ধরে তাঁরা যে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন, দেখে তা মনে হত। সঙ্গে আর্থিক অনটনের বিষয়টিও ছিল।’’
পুলিশ জানায়, যে ঘর থেকে ওই দম্পতির দেহ উদ্ধার হয়, তার দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে রাত পর্যন্ত ওই দম্পতির কোনও আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।