Nursing Home in Ekbalpur

সন্তানসম্ভবাকে আরএমও ‘সেজে’ ইনজেকশন চিকিৎসকের সহকারীর! একবালপুরের নার্সিংহোম বন্ধের নির্দেশ স্বাস্থ্য কমিশনের

কমিশনের তরফে ওই মহিলাকে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে মহিলা সেই ক্ষতিপূরণ নিতে চাননি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৫ ১৪:০২
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

ব্যথা নিয়ে কলকাতার একবালপুরের এক নার্সিংহোমে গিয়েছিলেন এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। অভিযোগ, সে সময় তাঁকে আরএমও ‘সেজে’ ইনজেকশন দিয়েছিলেন চিকিৎসকের সহকারী। বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পরে মহিলার গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। এর পরে স্বাস্থ্য কমিশনের কাছে অভিযোগ করা হয় মহিলার পরিবারের তরফে। এই ঘটনায় একবালপুরের ওই নার্সিং হোম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কমিশনের তরফে ওই মহিলাকে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে মহিলা সেই ক্ষতিপূরণ নিতে চাননি।

Advertisement

গত ৬ অগস্ট স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ করেন অলকা রায় নামে এক মহিলা। তাঁর অভিযোগ, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যন্ত্রণার কারণে একবালপুরের ওই নার্সিং হোমে গিয়েছিলেন তিনি। তখন অবিনাশ কুমার নামে এক ব্যক্তি নিজেকে আরএমও বলে পরিচয় দেন। অভিযোগ, আরএমও পরিচয় দিয়ে তাঁকে প্রেসক্রিপশন লিখে দেন তিনি। মহিলাকে একটি ইনজেকশনও দেন। তাতে ব্যথা শুরু হয়। ওই মহিলা বাড়ি চলে যান। তার পরে তাঁর গর্ভপাত হয়। অভিযোগকারী জানিয়েছেন, পরে ওই মহিলা জানতে পারেন, যিনি তাঁর চিকিৎসা করেছেন, তিনি আসলে চিকিৎসকই নন। তার পরে স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

নার্সিং হোমের মালিকের তরফে জানানো হয়, ওই দিন যিনি মহিলার চিকিৎসা করেছিলেন, তিনি চিকিৎসকের সহকারী। চিকিৎসকের টেবিলে তাঁর লেটারহেড থাকে। তাতেই তিনি প্রেসক্রিপশন লিখে দেন। এর পরেই নার্সিং হোম বন্ধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য কমিশন। স্বাস্থ্য অধিকর্তা (ডিরেক্টর অফ হেলথ সার্ভিস)-কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। মহিলাকে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

Advertisement

কমিশনের চেয়ারপার্সন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘মহিলাকে ওই ইনজেকশন দেওয়ার জন্যই তাঁর গর্ভপাত হয়েছে, এ বিষয়ে নিশ্চিত নই। বিষয়টি দেখবেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা।’’ তিনি জানান, ওই মহিলার যে ‘হেনস্থা’ হয়েছে, চিকিৎসক নন, এমন কেউ চিকিৎসা করেছেন বলে তাঁকে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও অভিযোগকারী জানিয়েছেন, তিনি টাকার জন্য অভিযোগ করেননি। মহিলা ক্ষতিপূরণের টাকা নেননি। রামকৃষ্ণ মিশনকে সেই টাকা দিতে বলেছেন। ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি নার্সিং হোম বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিশনের চেয়ারপার্সন জানিয়েছেন, নির্দেশের পরে নার্সিংহোমে নতুন রোগী নেওয়া বন্ধ হয়েছে। তার পরেই কর্তৃপক্ষ কমিশনের কাছে নির্দেশ পুনর্বিবেচনার (রিভিউ পিটিশন) আবেদন করেন। নার্সিং হোম খোলার অনুমতি চেয়ে আবেদন করে কর্তৃপক্ষ জানান, সেটি বন্ধ থাকায় অনেকের রোজগার ধাক্কা খেয়েছে। ডায়লিসিস রোগীদের ফেরত পাঠাতে বাধ্য হচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। কমিশনের চেয়ারপার্সন জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য অধিকর্তার রিপোর্ট না মেলা পর্যন্ত নার্সিং হোম খোলার অনুমতি দেওয়া হবে না। ৮ সেপ্টেম্বর কমিশন রিভিউ পিটিশন শুনবে। তত দিন বন্ধ থাকবে নার্সিং হোম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement