নিউ গড়িয়ায় বৃদ্ধাকে খুনের ঘটনায় আয়াকে গ্রেফতার করল পুুলিশ। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
নিউ গড়িয়ার পঞ্চসায়র থানা এলাকায় বৃদ্ধাকে খুনের ঘটনায় আয়া গ্রেফতার। সঙ্গে তাঁর এক পুরুষ সঙ্গীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, আয়া রাতে ওই সঙ্গীকে নিয়ে দম্পতির বাড়িতে এসেছিলেন। নিজে বাড়ির ভিতরে ঢুকেছিলেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গী বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। বৃদ্ধার দেহ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত আয়ার নাম আশালতা সর্দার। বয়স ৩৬ বছর। তাঁর সঙ্গী ছিলেন ৪১ বছরের মহম্মদ জালাল মীর। দু’জনেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলাহাটের বাসিন্দা। দু’জনে মিলে বৃদ্ধ দম্পতির সম্পত্তি হাতানোর চক্রান্ত করেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। শুক্রবার গভীর রাতে ১টা ৪০ মিনিট নাগাদ ঢোলাহাটের বাড়ি থেকে প্রথমে জালালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে শনিবার সকাল ৮টা ৫ মিনিটে নরেন্দ্রপুরের ভাড়া বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে আশালতাকে।
পঞ্চসায়রের এস৩২ কুলু ভিলার বাসিন্দা ৮২ বছরের প্রশান্ত দাস। স্ত্রী বিজয়া দাসের (৭৯) সঙ্গে থাকতেন বৃদ্ধ। দোতলা বাড়িতে তাঁরা ছাড়া আর কেউ থাকতেন না। শুক্রবার সকালে বাড়ি থেকে বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার করা হয়। সে সময় পাশের ঘরে মেঝেতে পড়ে ছিলেন বৃদ্ধও। তিনি আতঙ্কগ্রস্ত। তাঁকে আপাতত এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাখা হয়েছে। তাঁদের কন্যা জার্মানিতে এবং পুত্র মুম্বইয়ে থাকেন। তাঁদেরও খবর দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানতে পেরেছিল, বৃদ্ধ দম্পতির দেখাশোনার জন্য সম্প্রতি এক আয়াকে নিযুক্ত করা হয়। নিকটবর্তী আয়া সেন্টার থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল পরিবার। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। এর পরেই সন্দেহ আরও জমাট হয়। অবশেষে সেই আয়াকে গ্রেফতার করা হল।
নিউ গড়িয়ার ওই বাড়িতে সর্ব ক্ষণ ছিল সিসি ক্যামেরার নজরদারি। কিন্তু বৃদ্ধার দেহ উদ্ধারের পর পুলিশ দেখে, বাড়ির সিসিটিভি-র তার কাটা। এমনকি, বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন। বৃদ্ধার দেহ পাওয়া গিয়েছিল সিঁড়ির কাছ থেকে, হাত-পা বাঁধা অবস্থায়। ওই বাড়ির পরিচারিকা শুক্রবার সকালে এসে ডাকাডাকি করে সাড়া পাননি। তার পর পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে বৃদ্ধার দেহ দেখতে পান এবং পুলিশকে খবর দেন। পিছনের দরজাটি খোলা ছিল। বৃদ্ধার গায়ের গয়নাগাটি সব উধাও। আলমারিটিও খোলা ছিল। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ শুক্রবার সকাল থেকে ঘটনাস্থলে ছিল এবং তথ্য সংগ্রহ করেছে।
বৃদ্ধার দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, মাথায় আঘাত এবং শ্বাসরোধের কারণে এই মৃত্যু। বৃদ্ধার গলা টিপে ধরা হয়েছিল। ময়নাতদন্তের ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা আগে মৃত্যু হয়েছিল। আয়া এবং তাঁর সঙ্গীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।