স্বামীর সঙ্গে ফুলকুমারী মারিক।
বিয়ের সময় এক লাখ টাকা পণ চেয়েছিলেন পাত্র। পরে অবশ্য পাত্রী পক্ষের সঙ্গে বোঝাপড়ায় পণের টাকা না নিয়েই বিয়েতে রাজি হয়ে যান মানিকতলার দীপক মারিক। বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই শুরু হয় স্ত্রীর উপর নির্যাতন। এমনকি, এক আত্মীয়ের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েন দীপক।
এক দিকে পণের টাকার জন্য গঞ্জনা, অত্যাচার, অন্য দিকে আত্মীয়ের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক মেনে নেওয়ার জন্য চাপ। তিন বছরের দাম্পত্য জীবনে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন ফুলকুমারী। শুক্রবার দীপকের বাড়ি থেকেই তাঁর দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। ফুলকুমারীর পরিবারের অভিযোগ, পণের টাকা না পেয়েই তাঁকে বিষ খাইয়ে ‘খুন’ করা হয়েছে।
অভিযোগ, বিয়ের সময় দীপকের তরফে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়েছিল। তখন দিতে পারেনি ফুলকুমারীর পরিবার। পরে অবশ্য তারা মাঝে মাঝেই সোনার গয়না, টাকাপয়সা দিতেন। কিন্তু এর পরেও দিনের পর দিন অত্যাচার চলেছে তার উপর। প্রতিবাদ করলে কপালে জুটেছে লা়ঞ্ছনা। এমনকি মারধরও বাদ যায়নি। পরিবারের এক সদস্যের দাবি, সম্প্রতি দীপক এক আত্মীয়ের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন: ডাক্তারদের পাশে আছি, বার্তা পুলিশের
আরও পড়ুন: আম আদমির ফেসবুক পোস্ট ‘চুরি’! অভিযুক্ত কলকাতা পুলিশ
বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন ফুলকুমারী। কাউকে না বলার জন্য দীপক তাঁকে চাপ দিচ্ছিলেন বলেও ফুলকুমারীর পরিবারের অভিযোগ। যদিও তিনি কয়েক জনকে বিষয়টি জানিয়েও দিয়েছিলেন। এর পরই অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে। কয়েক দিন আগে ওই আত্মীয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় স্বামীকে দেখার পর, নিজেকে ঠিক রাখতে পারেননি ফুলকুমারী। প্রতিবাদ করেন তিনি। তবে তার যে এমন পরিণতি হবে, ভাবতেও পারেনি মৃতের পরিবার।
পুলিশ জানিয়েছে, সংজ্ঞাহীন অবস্থায় শ্বশুরবাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, তিন বছর আগে দীপকের সঙ্গে ফুলকুমারীর বিয়ে হয়। তাঁদের দেড় বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। দীপক গেঞ্জি কারখানায় কাজ করেন। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল নয়।
যদিও দীপকের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাঁর পরিবার। কী ভাবে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হল, তা স্পষ্ট হবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টর পরেই। মৃতার পরিবারের তরফে অভিযোগ পেয়ে, দীপককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ঠিক কী ঘটনা ঘটেছে, তা জানার চেষ্টা চলছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া হয়েছিল কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।