Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta News

আম আদমির ফেসবুক পোস্ট ‘চুরি’! অভিযুক্ত কলকাতা পুলি‌শ

কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখা বা স্পেশ্যাল সেল গত কয়েক বছরে কপিরাইট ভাঙার জন্য জেলবন্দি করেছে অনেক অভিযুক্তকেই। আর সেই পুলিশই নাকি কপিরাইট আইনের তোয়াক্কা না করে অন্যের জিনিস নিজের বলে চালাচ্ছে, এমনটাই অভিযোগ।

নেইমারকে নিয়ে এ বার নাজেহাল কলকাতা পুলিশ।

নেইমারকে নিয়ে এ বার নাজেহাল কলকাতা পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৮ ১৭:৩০
Share: Save:

আইনরক্ষকের বিরুদ্ধেই আইন ভাঙার অভিযোগ! তা-ও আবার কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধেই।

কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখা বা স্পেশ্যাল সেল গত কয়েক বছরে কপিরাইট ভাঙার জন্য জেলবন্দি করেছে অনেক অভিযুক্তকেই। আর সেই পুলিশই নাকি কপিরাইট আইনের তোয়াক্কা না করে অন্যের জিনিস নিজের বলে চালাচ্ছে, এমনটাই অভিযোগ।

ঘটনার সূত্রপাত ১৪ জুন। কলকাতার বাসিন্দা সুতীর্থ দাস তাঁর নিজের ফেসবুক পেজে মজার ছলেই লেখেন, ‘সাবধানের নেইমার’! সবুজের ‌‌‌‌‌‌‌‌‌উপর সাদায় লেখাটি পোস্ট করেন ওই দিন সকাল ১০.৪৩ মিনিটে। তাঁর ফেসবুক বন্ধুদের মধ্যে ১৮৯ জন লাইকও দিয়েছেন সেই পোস্টে। কমেন্টও করেছেন অনেকে।

আরও পড়ুন
অ্যাপ ক্যাবে চড়ে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ মা-মেয়ে

সুতীর্থ বলেন, “এর পর আমি নিজেই ভুলে গিয়েছিলাম। হঠাৎ আমার এক বন্ধু জানালেন, কলকাতা পুলিশ পথ নিরাপত্তা নিয়ে একটা প্রচার চালাচ্ছে। আর সেখানে হেলমেট পরার জন্য প্রচারে ব্যবহার করা হয়েছে ঠিক সেই লাইন, ‘সাবধানের নেইমার!”

পথ নিরাপত্তা নিয়ে প্রচারে সুতীর্থ দাসের ফেসবুক পেজ-এর লাইন (বাঁ-দিকে) ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে।

পেশায় বিজ্ঞাপনের ব্যাবসায়ী সুতীর্থ একটাই আক্ষেপ: “আমরা তো কলকাতা পুলিশের ফেসবুক কমিউনিটিরই অংশ। সেখানে তারা আমার পোস্ট ব্যবহার করলে আমার আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু তারা সেই ক্ষেত্রে বলতেই পারত যে এই পোস্টের আইডিয়া তারা আমার পোস্ট থেকে পেয়েছে। সামান্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করলে আমার মতো সাধারণ মানুষ আরও উৎসাহিত হবেন।”

আরও পড়ুন
ডার্ক ওয়েবে মাদক কারবার, নামী কলেজের ৩ ছাত্র গ্রেফতার

আর সেই কারণেই তিনি কলকাতা পুলিশের ফেসবুক মেসেঞ্জারে মেসেজ করে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানেও তাঁর অভিযোগ, কোনও উত্তর দেওয়ার সৌজন্য দেখায়নি কলকাতা পুলিশ।

সেখান থেকেই তাঁর ক্ষোভ: আমার অনুমতি ছাড়া এই লেখা ব্যবহার করা ইনটেলিজেন্স প্রপার্টি অ্যাক্ট অনুযায়ী অপরাধ। কপিরাইট আইনও ভাঙা হয়েছে এখানে। আর কারা ভাঙছে? খোদ কলকাতা পুলিশ, যারা আইন রক্ষা করে!

কলকাতা পুলিশের ফেসবুক মেসেঞ্জারে মেসেজ করে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন সুতীর্থ দাস।

কলকাতা পুলিশের এই সোশ্যাল মিডিয়া সেল তদারক করেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার-৩ সুপ্রতিম সরকার। তিনি বলেন, “এমন পোস্ট যদি কেউ আগে করে থাকেন, তাঁর সৃজনশীলতাকে সাধুবাদ জানাই। এই পোস্টের ব্যাপারে আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া সেলের জানা ছিল না। লক্ষ লক্ষ পোস্ট হয় নেটে। প্রত্যেকটির খবর রাখা তো অসম্ভব। আমাদের পোস্টটির বয়ান ঘটনাচক্রে এক থাকলেও সঙ্গের ভিসুয়াল আলাদা। উদ্দেশ্যও আলাদা, ফুটবলের মোড়কে ট্রাফিক সচেতনতা বাড়ানো। সে উদ্দেশ্য যে অনেকটাই সফল, সেটা লাইক ও শেয়ারের সংখ্যা আর অসংখ্য মানুষের তারিফেই পরিষ্কার। পথ নিরাপত্তার বিষয়টিই এখানে মুখ্য, সেটা যিনি ক্যাচলাইনটা আগে ব্যবহার করেছেন, তিনিও মানবেন, আমরা নিশ্চিত। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ সবারই সমর্থন পাবে এমনটাই আমাদের বিশ্বাস।” আর সেখানেই বোধহয় প্রশ্নটা থেকেই যায়। যে তারিফের কথা কলকাতা পুলিশের এই কর্তা বললেন, সেই তারিফের একটু ভাগ কি সুতীর্থর মতো সাধারণ নাগরিক পেতে পারেন না?

সেখানেই আবার চলে আসে সেই আপ্ত বাক্যটি—সাবধানের নেই-মার!

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Police Facebook Post Neymar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE