সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশের প্রচারে নেমার-মেসি।
নেমারে আছি, মেসিতেও!
কলকাতা পুলিশের টুইটার, ফেসবুকের প্রধান চরিত্র এখন বিশ্ব ফুটবলের এই মহাতারকারাই। কখনও ট্র্যাফিক সিগন্যালের সঙ্কেত বা হেলমেট দেখিয়ে টুইট করা হচ্ছে, ‘সাবধানের নেইমার’, কখনও বা মেসির দৌ়ড়ের ছবি ও রাস্তায় গাড়ির ছবি দেখিয়ে টুইট হচ্ছে, ‘স্পি়ড লিমিট মানতে হয়, সবাই তো আর মেসি নয়’। কখনও মেসির পেনাল্টি মিসকে ট্রোল করে বলা হচ্ছে, কলকাতার রাস্তায় আইন ভাঙলে জরিমানার ছা়ড় নেই। যা দেখে নেট দুনিয়ার নাগরিকেরা বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্বকাপ জ্বরে কাবু লালবাজারও।
ট্র্যাফিক সচেতনতা-সহ নানা প্রকল্পের প্রচারে নেট দুনিয়ায় কলকাতা পুলিশ অনেক দিন ধরেই তৎপর। কিন্তু এ বার সেই প্রচারে চটকদারির রং লাগাতে বিশ্বকাপের মতো সমসাময়িক মহাযজ্ঞকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। যা দেখে বিপণন বিশেষজ্ঞ রাম রে-র মনে পড়ে যাচ্ছে আমূলের বিজ্ঞাপনের কথা। সমসাময়িক রাজনীতি, সামাজিক ঘটনাকে নিয়ে আমূলের কার্টুন বিজ্ঞাপনের মতো জনপ্রিয়তা এ দেশে খুব কম সংস্থাই পেয়েছে। রাম বলছেন, ‘‘অনেক সময়ই বড় ইভেন্ট বা উৎসবের মঞ্চ কোনও ব্র্যান্ডের প্রচারে সাহায্য করে। বিশ্বকাপকে হাতিয়ার করে পুলিশের সচেতনতা অভিযান চলছে, এটা তো ভালই।’’
তবে এটাও অনেকে বলছেন, এই এক মাস পেরোলে বিশ্বকাপের মতো ব়ড় ইভেন্ট খুঁজে পাওয়া মুস্কিল। সে ক্ষেত্রে এই প্রচারে ভাটা পড়বে না তো? লালবাজারের এক কর্তা মানছেন সমস্যাটা। তবে তিনি অসহায়। ‘‘কিছু করার নেই। আমূলের মতো রাজনীতির উত্থান-পতন নিয়ে আমরা প্রচার চালাতে পারব না। তা হলে..’’, ইঙ্গিতপূর্ণ ভঙ্গিতে হাসছেন কর্তাটি। আর এক পুলিশকর্তা বলছেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থা ব্যঙ্গচিত্রে যা পারে, পুলিশ-প্রশাসন তা পারে না। এটা মেনে নিতেই হবে।’’ কিন্তু পুলিশের এই প্রচারে যুক্ত অনেকেই বলছেন, কলকাতায় ইভেন্টের অভাব নেই। বিশ্বকাপ পেরোলেই পুজোর মরসুম আসবে। তখন দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মীরাই হয়ে উঠতে পারেন প্রচারের মুখ।
পুলিশেরই অনেকে বলছেন, এমন প্রচার তো নতুন নয়। আগেও বেপরোয়া বাইকের ‘হিরোগিরি’ থামাতে ‘কোলাভেরি ডি’ গানের প্যারোডি করেছিল লালবাজার। পুজোর মরসুমেও ফি বছর নতুন নতুন কার্টুন তৈরি হয়। হেলমেট সচেতনতায় এক পুলিশকর্তার তৈরি ছড়া তো মুখে মুখে ফিরত। সোশ্যাল মিডিয়ার দাপটে সেই প্রচার বহু গুণে বেড়েছে। এক পুলিশকর্তাই বলছেন, ‘‘পুলিশ কমিশনার থেকে শুরু বিভাগীয় ডিসি, সবারই টুইটার হ্যান্ডল রয়েছে। ফেসবুকেও সক্রিয় বিভিন্ন পদের অফিসারেরা। তাই নেমার, মেসি ছড়িয়ে প়়ড়ছে নেট দুনিয়ার অলিগলিতে।’’
তবুও প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন, এত প্রচারের পরেও সচেতনতা কতটা বাড়ছে? প্রশ্ন জোরালো করছে গত ক’দিনে রাজপথে দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান। যার পিছনে উঠে আসছে নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ছোটানোর হুজুগই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy