বন্ধ হওয়ার পথে বাইক-ট্যাক্সি

অথচ বছর কয়েক আগে গুরুগ্রামে শুরু হওয়া বাইক-ট্যাক্সির পরিষেবা যথেষ্ট জনপ্রিয়। সেই ব্যবসার পরিধি দিল্লি পর্যন্ত ছড়াচ্ছে। সংস্থার দাবি, এই পরিষেবা পূর্ব ভারতে প্রথম।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৮ ০২:২৯
Share:

নিউ টাউনের পথে বাইক ট্যাক্সি। ছবি: শৌভিক দে

গত বছর মার্চে ঘটা করে উদ্বোধন হয়েছিল নিউ টাউনে বাইক-ট্যাক্সি পরিষেবার। কথা ছিল সেই পরিষেবা সম্প্রসারিত হবে। কিন্তু ব্যবসা ছড়িয়ে পড়া তো দূর, উল্টে লাটে উঠতে চলেছে। ব্যবসার মালিক এর দায় চাপাচ্ছেন প্রশাসনের দীর্ঘসূত্রতার উপরে।

Advertisement

কলকাতার দুই যুবক ইমরান মুস্তাফা ও ফিরদৌস কলিম যৌথ ভাবে শুরু করেছিলেন এই পরিষেবা। অ্যাপ ক্যাবের মতোই মোবাইলের অ্যাপের সাহায্যে বাড়ির সামনে হাজির হয় মোটরবাইক। চালক আরোহীকে নিয়ে যান গন্তব্যে। উদ্বোধনের দিন উপস্থিত ছিলেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক সুজিত বসু-সহ অনেকে। এমন অভিনব ব্যবসার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল বলে তাঁরা আশাও দেন। কিন্তু সংস্থার তরফে ইমরান মুস্তাফার দাবি, ‘‘চেয়েছিলাম শুধু নিউ টাউনে পরিষেবা সীমাবদ্ধ না রেখে গোটা কলকাতায় ছড়িয়ে দিতে। ব্যবসা শুরুর কয়েক মাসের মধ্যেই এ নিয়ে পরিবহণ দফতরে অনেক বার আবেদন করেছি। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি।’’

অথচ বছর কয়েক আগে গুরুগ্রামে শুরু হওয়া বাইক-ট্যাক্সির পরিষেবা যথেষ্ট জনপ্রিয়। সেই ব্যবসার পরিধি দিল্লি পর্যন্ত ছড়াচ্ছে। সংস্থার দাবি, এই পরিষেবা পূর্ব ভারতে প্রথম। অন্য শহরেও বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু প্রিয় শহর ছাড়তে চাননি। তাই নিউ টাউনের লস্করআইটে ৫০টি মোটরবাইক নিয়ে শুরু হয়েছিল পরিষেবা। স্বপ্ন ছিল এক বছরের মধ্যে ব্যবসার পরিধি বাড়িয়ে ৫০০টি মোটরবাইক চালু করার। বছর ঘুরলেও ব্যবসার বৃদ্ধি না হওয়ায় তা বন্ধ করার কথা ভাবছেন সংস্থার কর্তারা।

Advertisement

মুস্তাফা বলেন, ‘‘নিউ টাউনের বিভিন্ন আইটি সেক্টরে কর্মরত ছেলেমেয়েরা এই পরিষেবা নিচ্ছিলেন। নিয়মিত গ্রাহকদের ৭০ শতাংশই মহিলা, এতটাই নিরাপদ এই পরিষেবা।’’ ওই সংস্থার কর্ণধারদের দাবি, এর ফলে স্থানীয় যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগও মিলছিল। মোটরবাইক চালানোর পরীক্ষা নিয়ে চালক নিয়োগও হচ্ছিল।

এই পরিষেবার নিয়মিত গ্রাহক আইটি কর্মী অনুরাধা চৌধুরী জানান, ট্যাক্সির তুলনায় অনেক দ্রুত মোটরবাইক। প্রথম দু’কিলোমিটার কু়ড়ি টাকায় যাওয়া যায়। এর পরে প্রতি কিলোমিটারের জন্য পাঁচ টাকা লাগে। ফলে কম খরচে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেয়। কিন্তু বেপরোয়া না চালানোয় নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয় থাকে না। চালক ও আরোহী উভয়ের কাছেই থাকে হেলমেট। জিপিআরএস-এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত থাকায় কোথায় মোটরবাইক রয়েছে তা বোঝা যায়।

সংস্থার কর্ণধারেরা বলছেন, ‘‘আমাদের দেখে আরও একটি সংস্থা নিউ টাউনে এই পরিষেবা শুরু করেছিল। কিন্তু ব্যবসা বাড়াতে না পেরে লোকসানে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। আমরাও কত দিন ব্যবসা চালাতে পারব জানি না!’’

সব শুনে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর আশ্বাস, ‘‘কলকাতায় বাইক-ট্যাক্সি চালানোর অনুমতি চেয়ে ওই সংস্থা আবেদন করেছে। তা বিবেচনাধীন রয়েছে। ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যপারে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন