ফি বৃদ্ধি নিয়ে স্কুলে বিক্ষোভ, ব্যস্ত সময়ে জট

স্কুল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, অস্বাভাবিক হারে ফি বাড়ানো হয়নি। ক্লাসের ভিত্তিতে সর্বাধিক ২৩০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩০
Share:

 ক্ষুব্ধ: ফি কমানোর দাবি অভিভাবকদের। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

অস্বাভাবিক হারে ফি বৃদ্ধি করা হচ্ছে, এই অভিযোগে মঙ্গলবার সকালে এ জে সি বসু রোডের একটি বেসরকারি স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকদের একাংশ। জোড়া গির্জার বিপরীতে ওই মিশনারি স্কুলের সামনে বিক্ষোভের জেরে এ দিন সকালে ওই রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। যদিও ‘অস্বাভাবিক হারে’ ফি বৃদ্ধির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল পৌনে দশটা নাগাদ ওই স্কুলের সামনে অভিভাবকদের বিক্ষোভ শুরু হয়। তার অনেক আগে থেকেই স্কুলের সামনে জড়ো হতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ গত জানুয়ারি থেকে হঠাৎ করে ফি অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছেন। ক্লাস অনুযায়ী অন্তত ৪০০-৫০০ টাকা ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার কথা বলতে চাইলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ রাজি হননি। তাই এ দিন বিক্ষোভ দেখাতে পথে নামেন তাঁরা!

প্রসঙ্গত, মেয়েদের ওই স্কুলটিতে লোয়ার কেজি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৯০০ জন পড়ুয়া আছে। কৈলাস রাউত নামে এক অভিভাবকের অভিযোগ, ‘‘আমাদের আগে থেকে কিছুই জানানো হয়নি। কোনও নোটিসও দেওয়া হয়নি। আমরা অনেক বার আলোচনায় বসতে চেয়েছি। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ রাজিই হননি। উল্টে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে।’’ উত্তম ত্রিপাঠী নামে আর এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘স্কুলের উন্নয়নে কোনও টাকা খরচ করা হচ্ছে না। অথচ, প্রতি বছর ফি বাড়ানো হচ্ছে।’’ অভিভাবকদের আরও অভিযোগ, মেয়েদের স্কুল হওয়া সত্ত্বেও সেখানে কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। এ দিনের বিক্ষোভের জেরে বেশ কিছু ক্ষণ যান চলাচল ব্যাহত হয়। পরে পুলিশ এসে অভিভাবকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়।

Advertisement

স্কুল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, অস্বাভাবিক হারে ফি বাড়ানো হয়নি। ক্লাসের ভিত্তিতে সর্বাধিক ২৩০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। গত তিন বছরে ফি কতটা বাড়ানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই তার তালিকা পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, গত জানুয়ারি থেকেই অভিভাবকদের একাংশ বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তাঁদের আর্থিক সমস্যার কথা বিবেচনা করে ফি-তে ছাড় দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাদের ছাড় দেওয়া হবে, সেই তালিকাও প্রস্তুত। কিন্তু তাতেও কিছু অভিভাবক সন্তুষ্ট নন। স্কুলের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাকাউন্ট্যান্ট মাইকেল গোমস বলেন, ‘‘অস্বাভাবিক হারে ফি বাড়ানো হয়নি। স্কুলে শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী মিলিয়ে প্রায় ৩৫ জন রয়েছেন। তাঁদের বেতন-সহ স্কুলের অন্য খরচ চালানোর জন্য ন্যূনতম ফি-ই বাড়ানো হয়েছে।
তার পরেও আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে আমরা কয়েক জন অভিভাবককে ছাড় দিতে রাজি হয়েছিলাম। তবু এই অবস্থা।’’

তবে সিসি ক্যামেরা নেই কেন, সে প্রশ্নের সদুত্তর পাওয়া যায়নি স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে। বর্ধিত ফি নিয়ে আলোচনার জন্য আজ, বুধবার স্কুলে একটি বৈঠক হওয়ার কথা। ওই বৈঠকে স্কুল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও অভিভাবকদের তিন জন প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন