অভিযানে বেরিয়ে এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে পুরসভার দলের। শনিবার, শ্যামবাজারে। নিজস্ব চিত্র
প্রতি বরোয় কসাইখানার জন্য জায়গা খোঁজা শুরু করে দিল কলকাতা পুরসভা। শনিবারই তা নিয়ে প্রাথমিক বৈঠক হয় পুরসভায়। সেখানেই ঠিক হয়েছে যে, দ্রুত জমি চিহ্নিত করে ছোট কসাইখানা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, ভাগাড়-কাণ্ডের জেরে প্রতি বরোয় কসাইখানা তৈরির সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে পুর প্রশাসনের তরফে। সেইমতোই এ দিনের বৈঠকে কোথায় সেই কসাইখানা তৈরি করা যাবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘কসাইখানার জন্য জমি দ্রুত চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে।’’
সেই সঙ্গে নিজেদের পরীক্ষাগারেই যাতে মাংসের নমুনা পরীক্ষা করা যায়, তার জন্য পুর পরীক্ষাগারের মানোন্নয়নের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ। পুরসভা সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই এই নিয়ে আলোচনা চলছিল। সম্প্রতি পুর পরীক্ষাগারের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য অর্থও মঞ্জুর হয়েছে। এক বার পরীক্ষাগারের মানোন্নয়ন হলে সেখানেই মাংসের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা সম্ভব বলে জানাচ্ছেন পুরকর্তাদের একাংশ। বর্তমান পরিকাঠামোয় সংগৃহীত মাংস মুরগি, খাসির না অন্য কিছুর, তা বলা সম্ভব নয় বলেই পুরসভা সূত্রের খবর।
তবে শুধু পচা মাংসই নয়, ভেজাল খাবার ও সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত বরফের বিরুদ্ধেও এ দিন অভিযান চালায় পুরসভা। শ্যামবাজার এলাকায় অতীনবাবুর নেতৃত্বে পুরকর্মীদের একটি দল অভিযান চালায়।
প্রসঙ্গত, এর আগে একাধিক বার ওই এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে পুরসভার তরফে। কিন্তু তার পরেও দেখা যাচ্ছে যে, খাবারে কৃত্রিম রং মেশানোর পাশাপাশি অবাধে নরম পানীয় ও শরবতে সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত বরফ মেশানো হচ্ছে। এ দিন পুরো পরিস্থিতি দেখে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন অতীনবাবু। এমনকি, এত বার সতর্ক করার পরেও যে দোকানগুলি এই কাজ করে যাচ্ছে, তাদের লাইসেন্স বাতিলেরও হুমকি দেন। অতীনবাবুর কথায়, ‘‘এই শেষ বারের মতো সতর্ক করা হচ্ছে। এর পরে দোকানের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। প্রয়োজনে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে।’’ এ দিন সকালে প্রায় ২৫টি দোকানে অভিযান চলে।
প্রসঙ্গত, ভাগাড়-কাণ্ডের জেরে ধাপায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ধাপায় সারাক্ষণই সিসিটিভি নজরদারি চলে। কিন্তু বাড়তি সতর্কতা হিসেবে সিসিটিভি-র ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেখানে কোনও অসঙ্গতি দেখলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। জঞ্জাল সাফাই দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘ধাপায় কেউ ঢুকতেই পারবে না এখন। ২৪ ঘণ্টাই নজরদারি চালানো হচ্ছে সেখানে।’’