এই নির্মাণকাজ ঘিরেই উঠেছে তোলাবাজির অভিযোগ। রবিবার, ওয়াটগঞ্জে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
শহরে সিন্ডিকেট-দৌরাত্ম্য নতুন কিছু নয়। ইমারতি দ্রব্য সরবরাহের দখলদারি ঘিরে বার বার উত্তেজনা ছড়িয়েছে একাধিক এলাকায়। সেই তালিকায় নাম জুড়ল ওয়াটগঞ্জ থানা এলাকার কবিতীর্থ সরণির। বহুতল নির্মাণ ঘিরে তোলাবাজির অভিযোগে ঘটল রক্তপাত। দাবি মতো টাকা দিতে রাজি হননি ইট, বালি, সিমেন্টের সরবরাহকারী রাজীব পুরী। তারই জেরে তাঁকে ছুরি দিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগে বিবেক সিংহ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার গভীর রাতে।
সূত্রের খবর, ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের কবিতীর্থ সরণির একই পাড়ায় বাড়ি রাজীব এবং বিবেকের। সেখানে পুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উল্টো দিকে এক বহুতল নির্মাণ হচ্ছে। রাজীব সেখানে ইট, বালি, সিমেন্ট সরবরাহে যুক্ত। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাতে রাজীবের কাছে টাকা চায় বিবেক। তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রথমে বচসা বাধে। পুলিশ সূত্রের খবর, দাবি মতো টাকা না দিয়ে রাজীব বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। সে সময়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে বিবেক। আক্রান্তের চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘুম ভেঙে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছে রাজীবকে এসএসকেএমে নিয়ে যায়। পরে গ্রেফতার করা হয় বিবেককে। ধৃতকে রবিবার আদালতে তোলা হলে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
সংশ্লিষ্ট বহুতলটি যিনি নির্মাণ করছেন, তিনি আপাতত শহরের বাইরে। এ দিন রাজীব বলে, ‘‘তিন মাস ধরে টাকা চেয়ে চাপ দিচ্ছিল বিবেক। না দিলে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছিল। আমি বলেছিলাম, আইন মেনে কাজ হচ্ছে। টাকা দেব কেন? সে জন্য বিবেক প্রথমে আমার এক বন্ধুকে মারধর করে। তার পরে আমার উপরে হামলা চালায়।’’ বিবেক ছাড়া ঘটনায় সুজিত কুমার ও মনোজ সাউ নামে আরও দু’জন যুক্ত বলে দাবি রাজীবের।
যদিও স্থানীয়দের একাংশ বলছেন, রাজীবের ভাবমূর্তিও খুব ভাল নয়। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়েই এই গোলমাল।’’ ঘটনাটি নিয়ে রাজীবের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও প্রতি বারই কোনও না কোনও অজুহাতে সে ফোন কেটে দেয়। এক সময়ে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। তার পরিবারের কেউ মুখ খোলেননি। স্থানীয় সিপিএম কাউন্সিলর বিলকিস বেগম বলেন, ‘‘শহরের বাইরে আছি। ঠিক কী ঘটেছে, বলতে পারব না। তবে যত দূর জানি, পুরসভার নিয়ম মেনে ওই বহুতল তৈরি হচ্ছে। কোনও রকম অন্যায় কাজ বরদাস্ত করা হবে না।’’