নববর্ষ উদ্যাপনের রাতে সপরিবারে রেস্তরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন যাদবপুরের বাসিন্দা, শিক্ষিকা অমৃতা ভট্টাচার্য। অভিযোগ, রেস্তরাঁয় প্রায় এক ঘণ্টা বসে থেকেও খাবার না পাওয়ার পরে প্রতিবাদ করেন তিনি।
এর ফলে রেস্তরাঁর কর্মীদের হাতেই প্রহৃত হন তাঁর বৃদ্ধ বাবা। বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে রেহাই পাননি অমৃতা, তাঁর স্বামী এবং একরত্তি পুত্রও। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবিতে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ঘটনার পরের দিনেই। ঘটনার ছ’দিন পরেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা না নেওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে, মা, বাবা, স্বামী এবং শিশুপুত্রকে নিয়ে গত ১৫ এপ্রিল রাত দশটা নাগাদ ৫৬, দক্ষিণ ট্যাংরা রোডের রেস্তরাঁয় ঢোকেন অমৃতা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘রেস্তরাঁয় প্রায় এক ঘণ্টা বসে থাকার পরেও কেউ খাবার পরিবেশন করতে আসেননি। এর পরে জলের বোতল চাইতে গেলে উল্টে রেস্তরাঁর ম্যানেজার আমার বাবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। বাবা তার প্রতিবাদ করতে গেলে, অন্য কর্মীরা বাবাকে এসে মারধর শুরু করেন। বাবার চোখে সজোরে ঘুষি মারায় চোখ ফুলে যায়।’’ অমৃতার বাবা কলকাতা পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক বিপ্লব ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘আমাকে মারতে দেখে জামাই, মেয়ে, নাতি ছুটে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। ধস্তাধস্তি চলাকালীন আমার, জামাই ও মেয়ের তিনটি মোবাইলই হারিয়ে গিয়েছে।’’
প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করলেও অভিযুক্তেরা সে দিনই জামিন পেয়ে যান। এ প্রসঙ্গে বিপ্লববাবুর অভিযোগ, ‘‘এত বড় ঘটনার পরেও পুলিশ অভিযুক্তদের সঙ্গে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করায় তারা অনায়াসে জামিন পেয়ে যায়। অভিযুক্তদের অপেক্ষাকৃত লঘু ধারা দেওয়া হয়েছে। ঘটনার এক সপ্তাহ পরেও ওই তিনটি মোবাইল ফিরে পেলাম না। পুলিশ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিক।’’ যদিও ওই রেস্তরাঁর ম্যানেজার জোসেফ লি বলেন, ‘‘ওই পরিবারটি প্রথম থেকে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছিল। ওঁরাই প্রথমে আমাদের মারধর শুরু করেন। আমরা কাউকে মারধর করিনি।’’ এ প্রসঙ্গে লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েই পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল। মোবাইল তিনটির খোঁজে তল্লাশিও চলছে।’’