দখলদার না সরায় থমকে জলাধার তৈরি

সল্টলেকের পাঁচ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে সেই জলাধার তৈরি হওয়ার কথা। জমিও চিহ্নিত হয়ে রয়েছে।

Advertisement

কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৮ ০২:৪৩
Share:

ছ’মাস পার করেও শুরু করা যাচ্ছে না জলাধার তৈরির কাজ। দ্রুত কাজ শুরু না হলে বিধাননগর পুরসভার সল্টলেক এবং রাজারহাট-গোপালপুর অংশের একাধিক ওয়ার্ডে পরিস্রুত পানীয় জলও সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। সোমবার বিধাননগর পুরসভায় কেএমডিএ-র প্রতিনিধিরা এ কথাই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। যা স্বীকার করেছেন মেয়র সব্যসাচী দত্ত। যদিও তাঁর দাবি, কাউন্সিলরদের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে সমস্যা মেটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

সল্টলেকের পাঁচ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে সেই জলাধার তৈরি হওয়ার কথা। জমিও চিহ্নিত হয়ে রয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে ঝুপড়িবাসীদের না সরালে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। কবে সেই কাজ শুরু হবে, তা নিশ্চিত করে কেউ জানাতে পারেননি।

২০১৭-র অক্টোবরে অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল বিশ্বকাপের সময় থেকে সল্টলেকে অস্থায়ী দোকানদার, হকার কিংবা ঝুপড়িবাসীদের সরানোর কাজ চলছে। অথচ, পানীয় জল প্রকল্পের মতো জরুরি পরিষেবার কাজ শুরুর জন্য ঝুপড়িবাসীদের সরানো যাচ্ছে না। কিন্তু কেন?

Advertisement

জবাব দিতে অবশ্য কেউই রাজি নন। তবে ঝুপড়িবাসীদের পুনর্বাসন না দিয়ে উচ্ছেদের বিপক্ষে খোদ শাসক দলেরই একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, ওই জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ৫০টি পরিবার বসবাস করছে। তাঁদের পুনর্বাসন না দিয়ে উচ্ছেদ করলে তা সরকারের নীতির বিরুদ্ধে যাবে।

সম্প্রতি বিধাননগর পুরসভার পাঁচ নম্বর বরো এলাকায় হকারদের সরিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে সুজিত বসু বলেছিলেন, ‘‘হকার কিংবা ঝুপড়িবাসীদের নিয়ে রাজ্য সরকারের একটি নির্দিষ্ট নীতি রয়েছে। প্রশাসন যেন সেই বিষয়টি বিবেচনায় রাখে।’’

নিউ টাউন জলপ্রকল্প থেকে বিধাননগর পুর এলাকায় জল সরবরাহ করার তোড়জোড় চলছে। পাইপলাইন বসানোর কাজও অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ওই জলপ্রকল্পের পরিস্রুত পানীয় জল ধরে রাখতে প্রয়োজন জলাধারের। রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার ২২ থেকে ২৬ নম্বর ওয়ার্ড এবং সল্টলেকের একাংশে জল সরবরাহের জন্য পাঁচ নম্বর ট্যাঙ্ক সংলগ্ন এলাকায় জমি চিহ্নিত করা হয়।

স্থানীয় বরো চেয়ারপার্সন অনিতা মণ্ডল জানান, পুর এলাকায় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় অবশেষে সেই সমস্যা মিটতে চলেছে। কিন্তু দখলদারির জন্য সেই কাজ করা যাচ্ছে না।

মেয়র সব্যসাচী দত্ত জানান, কেএমডিএ-র প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, দখলদারদের না সরালে ওই জলাধারের কাজ করা যাবে না। বোর্ড মিটিংয়ে অবিলম্বে ঝুপড়ি সরানোর বিষয়ে সর্বসম্মত ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত হলেও ঝুপড়ি কি সরানো যাবে?

রাজারহাট-গোপালপুরের বিধায়ক তথা কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বলেন, ‘‘একাধিক সরকারি দফতর মিলে ওই প্রকল্পের কাজ করছে। নিশ্চিত ভাবেই তারা সমস্যার সমাধান করবে।’’

যদিও বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু বলেন, ‘‘জল সরবরাহের মতো জরুরি পরিষেবার কাজ ব্যাহত হবে না। তবে ঝুপড়িবাসীদের সরানো কিংবা পুনর্বাসন সংক্রান্ত নিয়ে আলোচনা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement