প্রতীকী ছবি।
পুজোয় ভিড় সামলানোর ডিউটিতে ব্যস্ত পুলিশ। কিন্তু তা বলে শহরের বুকে রাতে মত্ত মোটরবাইক আরোহীদের কোনও ছাড় দিতে রাজি নন লালবাজারের কর্তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার, তৃতীয়া থেকেই রোজ রাতে বেপরোয়া মোটরবাইকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ওই বাইক আরোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছে লালবাজার। কলকাতা পুলিশের ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ডের সঙ্গে অভিযানে যোগ দিয়েছে ‘স্পেশ্যাল রেড সেকশন’ও। শনি এবং রবিরার ১০০-র বেশি মোটরবাইক আরোহীর বিরুদ্ধে বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং হেলমেট ছাড়া চালানোর মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে কোনও গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়নি বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
পুজোর ডিউটির মধ্যেই প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ডের অফিসারদের নিয়ে লালবাজারের বাছাই জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে। অফিসারেরা বাইকআরোহীর হাবভাব সন্দেহজনক মনে করলেই আটক করে কাগজপত্র দেখতে চেয়েছেন, চালক মত্ত কি না বুঝতে ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার’ দিয়ে মেপেছেন মুখের গন্ধ। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘পুজোর দিনে আইন না মানলে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে, এটা জানতে পেরেই ওই দিনগুলিতে বদলে গিয়েছে রাতের শহরের বেপরোয়া ছবিটা।’’ আগে পুজোর ক’দিন শহরে যে ভাবে দাপিয়ে বেড়াতেন বাইক আরোহীরা, তাতে এমন অভিযান চালালে তাঁদের দাপট কমবে বলেই মত কর্তাদের। বেপরোয়া মোটরবাইকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পাশাপাশি রাতে উড়ালপুলে উঠতে পারবে না কোনও বাইক। পুলিশ বলছে, এর ফলে দুর্ঘটনার পাশাপাশি মোটরবাইক রেসও আটকানো যাবে।
রবিবার রাতে হাওড়া থেকে কসবায় ঠাকুর দেখতে যাওয়ার জন্য হাওড়ার বাসিন্দা সুমিতাভ নন্দী বান্ধবীকে নিয়ে বিদ্যাসাগর সেতু পেরিয়ে কলকাতায় ঢুকেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, প্রথমে এজেসি বসু রোড উড়ালপুল এবং পরে মা উড়ালপুল দিয়ে সোজা ইএম বাইপাস হয়ে কসবা যাবেন। কিন্তু ভিক্টোরিয়ার সামনে থেকে উড়ালপুলে উঠতে গিয়েই পুলিশি বাধার সামনে পড়লেন তিনি। উপস্থিত পুলিশকর্মীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, রাতে ওই উড়ালপুল দিয়ে মোটরবাইক চলাচল করবে না।
লালবাজার জানায়, পুজোয় রাতে বেপরোয়া মোটরবাইকের দুর্ঘটনা আটকাতে শুধু ওই উড়ালপুলটিই নয়। বাকি উড়ালপুলগুলিতেও বাইক চলাচল করতে পারবে না। রাত ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত ওই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এমনিতেই বছরের অন্য সময়ে ওই নিষেধাজ্ঞা থাকে। কিন্তু বেপরোয়া বাইকের দাপট আটকাতে পুজোর দিনগুলিতেও তা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুলিশকর্তারা।
কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ট্র্যাফিক) ভি সলোমন নেসাকুমার জানান, অন্য সময়ের মতোই মোটরবাইকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রয়োজন হলে ফের গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হবে।