বিধাননগর পুলিশের এএসআইয়ের বিরুদ্ধে আইনজীবী ও পুত্রকে হেনস্থার অভিযোগ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
কলকাতা হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রণেন্দ্রনারায়ণ রায়ের পুত্র মনুজেন্দ্রনারায়ণ রায় এবং পৌত্র সৌরিন্দ্রনারায়ণ রায়কে হেনস্থার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীকে আপাতত সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল আদালত। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে। এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করতে হবে বিধাননগর পুলিশকে। ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। ওই দিন কোনও আইনি প্রক্রিয়ায় যোগ দেবেন না হাই কোর্টের আইনজীবীরা।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির পুত্র মনুজেন্দ্র পেশায় আইনজীবী। বুধবার রাতে সল্টলেকে বাড়ির সামনেই তাঁকে এবং তাঁর পুত্রকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। মনুজেন্দ্রের পুত্র সৌরিন্দ্রনারায়ণ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, সাদা পোশাকে কয়েক জন পুলিশ তাঁদের হেনস্থা করেন। পুলিশের মারে তাঁর বাবা পড়ে গিয়েছিলেন। তাঁর কোমরের (পেলভিস) হাড় ভেঙে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে এই মামলাটি শুনানির জন্য উঠেছিল। বিচারপতি জানিয়েছেন, বুধ এবং বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে। এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু করতে হবে বিধাননগর পুলিশকে।
সৌরিন্দ্রনারায়ণ তাঁর অভিযোগপত্রে এএসআই তুষারচন্দ্র কুমারের নাম উল্লেখ করেছেন। তাঁকে আপাতত কর্তব্য থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ঘটনার ছবি দেখে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘গলায় সোনার চেন ঝুলিয়ে পুলিশ ডিউটি করছে?’’ আগামী সোমবার আবার এই মামলার শুনানি হবে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বৃহস্পতিবার বেলা ৩টে নাগাদ বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে এক দিনের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত হয়েছে। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়ে আইনজীবীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে তাঁরা কাজে যোগ দেবেন না। সোমবার ২৫ অগস্ট পরিস্থিতির অগ্রগতি দেখে তাঁরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন।
অভিযোগ, বুধবার রাত ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ সল্টলেক সেক্টর-২ এলাকায় সাদা পোশাকের কয়েক জন পুলিশকর্মী ওই আইনজীবী এবং তাঁর পুত্রকে হেনস্থা করেছেন। সৌরিন্দ্রনারায়ণ বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠছিলেন। সেই সময়ে কোনও কারণ ছাড়াই তাঁর উপর চড়াও হন সাদা পোশাকের কয়েক জন পুলিশকর্মী। মারধর করেন। সাহায্যের জন্য বাবাকে ডেকেছিলেন সৌরিন্দ্রনারায়ণ। চেম্বার থেকে মনুজেন্দ্র ছুটে এলে তাঁকেও মারধর করা হয়। পেলভিসের বাঁ দিকের হাড় ভেঙে গিয়েছে তাঁর। বৃহস্পতিবার সকালেই এই ঘটনায় হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। বিচারপতি ঘোষ সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন।