Coronavirus in Kolkata

বিমানবন্দরের মেঝেতেই পিপিই ফেলছেন বহু যাত্রী

ব্যবহৃত পিপিই এ ভাবে ফেলে যাওয়ার বিপক্ষে চিকিৎসকেরাও।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২০ ০৫:৩৮
Share:

বিপজ্জনক: ডাস্টবিনের বদলে মেঝেয় পিপিই ফেলে দিচ্ছেন অনেক যাত্রী। বাড়ছে সংক্রমণের আশঙ্কা। নিজস্ব চিত্র

বিমানে কলকাতায় পৌঁছে নামার পরে কোন ডাস্টবিনে পিপিই ফেলতে হবে, তা স্পষ্ট করে লেখা আছে। তা সত্ত্বেও বিমানবন্দরের টার্মিনালের মেঝেতে পিপিই ফেলে চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠছে যাত্রীদের একাংশের বিরুদ্ধে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এ বার মেঝেতে পিপিই ফেলে চলে গেলে সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে জরিমানা করা হতে পারে।

Advertisement

বিমানের মাঝের আসনে বসে যাঁরা আসছেন, উড়ান সংস্থার তরফে তাঁদের এই পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) দেওয়া হচ্ছে। কলকাতায় নেমে কিছু যাত্রী সেই পিপিই নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। কিন্তু, অধিকাংশই সেগুলি ফেলে দিচ্ছেন বিমানবন্দরের টার্মিনালে।

সম্প্রতি বেঙ্গালুরু থেকে মাঝের আসনে বসে কলকাতায় এসেছেন শ্রেয়া দাশগুপ্ত। তাঁর অভিযোগ, তিনি কলকাতায় পৌঁছে দেখেন, পিপিই রাখার বিন উপচে পড়ছে। শ্রেয়ার কথায়, ‘‘আশপাশে আর ডাস্টবিন না-পেয়ে আমি ওই বিনের পাশেই পিপিই রেখে এসেছি।’’ তিনি জানিয়েছেন, পিপিই মুড়ে ফেলে দিলে সেটি আবার ফুলে উঠছে। ফলে কয়েকটি পিপিই ফেললেই ভরে যাচ্ছে বিন।

Advertisement

আরও পড়ুন: বালক থেকে বৃদ্ধ, ২৪ ঘণ্টায় সাত অস্বাভাবিক মৃত্যু

অ্যারাইভাল লাউঞ্জে পরপর কয়েকটি বিন রাখা হয়েছিল। উড়ান সংস্থার এক অফিসারের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘ওই বিনে পিপিই ফেলার চিহ্ন দেখেও মেঝেতে ফেলে চলে যাচ্ছেন বহু যাত্রী।’’ প্রতি মুহূর্তে তা পরিষ্কার করতে হচ্ছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকেই। সম্প্রতি কলকাতায় আসা আর এক যাত্রী অরিত্র পাল অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি কলকাতায় নেমে দেখেছেন, সহযাত্রীরা বিন খুঁজে সেখানেই পিপিই ফেলেছেন।

কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিনের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। পিপিই-র সঙ্গে যেন প্লাস্টিকের ব্যাগও দেওয়া হয়, সেই অনুরোধ করা হয়েছে উড়ান সংস্থাকে। ব্যবহারের পরে পিপিই মুড়ে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে সেটি বিনে ফেলে দেওয়া যাবে। এর ফলে ভিতরে থাকা পিপিই আর ফুলে উঠবে না।’’ এর পরেও যদি কোনও যাত্রীকে দেখা যায় টার্মিনালের মেঝেতে পিপিই ফেলে যেতে, তা হলে তাঁকে জরিমানা করার কথাও ভাবা হচ্ছে বলে অধিকর্তা জানিয়েছেন।

ব্যবহৃত পিপিই এ ভাবে ফেলে যাওয়ার বিপক্ষে চিকিৎসকেরাও। মেডিসিনের চিকিৎসক শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ব্যবহৃত পিপিই নিয়ম মেনে নষ্ট করে ফেলা উচিত।’’

আরও পড়ুন: করোনার আতঙ্কে কনস্টেবলেরা, দুষ্কৃতী ধরবে কে

শুধু টার্মিনালে পিপিই ফেলে যাওয়া নয়। যাত্রীদের একাংশের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব-বিধি না মানারও প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অধিকর্তা। সম্প্রতি আমদাবাদ থেকে কলকাতায় আসা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রী জানান, সেখানকার বিমানবন্দরের চিত্রটাও একই। অরিত্রর কথায়, ‘‘বেঙ্গালুরুতেও দেখলাম বোর্ডিং গেটে হুড়োহুড়ি। কেউ দূরত্ব মেনে দাঁড়াচ্ছেন না।’’ কলকাতায় বিমান থামার পরে যে ভাবে যাত্রীরা নামার জন্য হুড়োহুড়ি করছেন, তা দেখে অবাক তিনি।

আবার শ্রেয়ার অভিজ্ঞতা, কলকাতায় তাঁদের বিমান থামার পরে সবাই উঠে দাঁড়ালেও বিমানসেবিকারা ঘোষণা করেন, এক বারে চারটি সারির যাত্রীরা নামতে পারবেন। তাতে নামার সময়ে ঠেলাঠেলি হয়নি ঠিকই। তবে টার্মিনালে গিয়ে মালপত্র সংগ্রহ করার সময়ে দৃশ্যটা আবার বদলে গিয়েছে।

অধিকর্তার কথায়, ‘‘আমরা নিয়মিত ঘোষণা করছি। কিন্তু যাত্রীরা শুনছেন কোথায়? এত যাত্রীকে জোর করে তো দূরত্ব-বিধি পালন করানো যাবে না। শুধু অনুরোধই করতে পারি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন