BJP MLA

বিধানসভা ভাঙচুরের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত চার বিজেপি বিধায়ক, শাস্তির হাত থেকে রেহাই দিলেন স্পিকার বিমান

মঙ্গলবার বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের উপর হামলার ঘটনার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত‍্য বসুর ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের পাকিস্তানের খান সেনার সঙ্গে তুলনা টেনে বক্তৃতা করার পর উত্তপ্ত হয়েছে বিধানসভার পরিবেশ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০০:৪৬
Share:

বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

বিধানসভায় ভাঙচুরের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হলেও আপাতত শাস্তি পেলেন না বিজেপির চার বিধায়ক। মঙ্গলবার বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওই বিধায়কেরা দোষী হলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আপাতত সতর্ক করে ছাড় দেওয়া হয়েছে। বিমানের বক্তব্য, “ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে জন্য অভিযুক্তদের সংযত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

উল্লেখ্য, গত ২৩ জুন বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে ভাঙচুরের ঘটনার অভিযোগ করে তৃণমূল পরিষদীয় দল। অভিযোগ ওঠে বিরোধী শিবির তথা বিজেপির একাধিক বিধায়কের বিরুদ্ধে। নাম জড়ায় বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ‍্যসচেতক শঙ্কর ঘোষ, কুমারগ্রামের বিধায়ক মনোজ ওঁরাও, ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মণ এবং আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের মতো নেতাদের। এর পরেই তদন্তে নেমে একটি কমিটি গঠন করা হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন বিধানসভার প্রধান সচিব। ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বক্তব্য শোনার জন্য ২১ জনকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। দীর্ঘ সময় ধরে সাক্ষ্যগ্রহণের পর সদ্য জমা পড়েছে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট।

রিপোর্ট হাতে পেয়েই মঙ্গলবার স্পিকার জানান, শুধুমাত্র চার বিজেপি বিধায়ক নন, মোট ১০ জন সদস্যের বিরুদ্ধেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তবে তাঁদের কারও বিরুদ্ধে আপাতত কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বরং সতর্ক করা হয়েছে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না হয়। বিমানের হুঁশিয়ারি, বিধানসভা গণতন্ত্রের মন্দির। এখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির যে কোনও প্রচেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না। পরিষদীয় রাজনীতির বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, অধ্যক্ষ আপাতত নরম অবস্থান নিয়েছেন। শাস্তি দিলে বিধানসভা আরও উত্তপ্ত হতে পারত, এমনকি আইনি জটিলতাও তৈরি হতে পারত। তাই সতর্কবার্তা দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার করেছেন বিমান। তবে ভবিষ্যতে যদি এমন ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটে, তখন যে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

সব মিলিয়ে, জুন মাসের ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা থামার কোনও লক্ষণ নেই। তদন্ত রিপোর্টে দোষ প্রমাণ হলেও শাস্তি এড়িয়ে যাওয়ায় বিরোধীরা এখন আরও সরব হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বিধানসভার ভিতরের এই অশান্তি বাইরে রাজ্য রাজনীতির অঙ্গনেও নতুন করে তরঙ্গ তুলতে চলেছে। কারণ মঙ্গলবার বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের উপর হামলার ঘটনার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত‍্য বসুর ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের পাকিস্তানের খান সেনার সঙ্গে তুলনা টেনে বক্তৃতা করার পর উত্তপ্ত হয়েছে বিধানসভার পরিবেশ। যে কারণে প্রতিবাদ জানিয়ে বিধানসভার অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement