সল্টলেক মানেই মশা। সল্টলেক মানেই বিকেলের পরে বাড়ির দরজা-জানলা বন্ধ হয়ে যাওয়া। এই চেনা ছবিটি কিছুটা হলেও অনেক জায়গায় পাল্টে গিয়েছে। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এখন বিধাননগরে মশার উপদ্রব কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে।
কী ভাবে পরিবর্তন? বিধাননগর পুরসভার দাবি, এপ্রিল থেকে নিয়মিত বাগবাজারের গঙ্গার স্লুইস গেট খুলে কেষ্টপুর ও বাগজোলা খালে গঙ্গার জল ঢোকানো হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিদিন ৪১টি ওয়ার্ডের আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে। খোলা নর্দমা পরিষ্কার করা হচ্ছে। সপ্তাহে এক বার মশা মারার ধোঁয়া দেওয়া হচ্ছে। বস্তি এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে জল ঢেকে রাখতে বলা হচ্ছে। এ ভাবেই মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। এই পরিবর্তনে খুশি বাসিন্দারা। সল্টলেকের এক বাসিন্দা অমিত ঘোষ বলেন, ‘‘গরমে এমনিতেই মশা একটু কমে। শীতেও এমন থাকলে আমাদের দুর্দশা ঘুচবে।’’
উল্টোডাঙা থেকে ভিআইপি রোডের ধার ঘেঁষে চলে গিয়েছে কেষ্টপুর খাল। সল্টলেকের এএ ব্লক থেকে এএল ব্লক—এই খালের পাশেই রয়েছে। ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল চিংড়িহাটা থেকে এল ব্লক পর্যন্ত গিয়েছে। আর বাগজোলা খাল কেষ্টপুর থেকে রাজারহাট হয়ে বামনঘাটার দিকে চলে গিয়েছে। এতদিন এই খালগুলি ছিল মশার আঁতুড়। এখন তিনটি খালে নিয়মিত নৌকা করে মশা মারার তেল ছড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি গঙ্গার জল ঢোকানো হচ্ছে।
বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয়কুমার রায় বলেন, ‘‘বিধাননগর পুর নিগম গঠন হওয়ার পরে রাজারহাট, বাগুইআটি, কেষ্টপুর ও নিউ টাউনের কিছু এলাকা সল্টলেকের মধ্যে আনা হয়েছে। ওই এলাকার অধিকাংশ নর্দমাই খোলা। সেগুলি নিয়মিত সাফ হচ্ছে। কেষ্টপুর খালেও প্রচুর মশা হতো। সেচমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে গঙ্গার জল ঢোকানো শুরু হওয়ায় মশা কমেছে।’’
বিধাননগর পুর এলাকায় ২০১২ থেকে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে থাকায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুবই বিরক্ত হন। পুর-কর্তাদের এই বিষয়ে নজরদারি জোরদার করতে নির্দেশ দেন। কলকাতা পুরসভার সাহায্য নেওয়ার কথাও বলেন। তার পরেই নড়েচড়ে বসেন বিধানগরের পুর-কর্তারা। মেয়র সব্যসাচী দত্ত, সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন। নিয়মিত গঙ্গার জল ছাড়ার ব্যবস্থা হয়। মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল) দেবাশিস জানা বলেন, ‘‘দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সংস্থার সঙ্গে মশা-নিধন সংক্রান্ত একটি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। চুক্তিটি হলে মশার উপদ্রব আরও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।’’