ময়দানে পাতা পোড়ানোর কৈফিয়ত চায় আদালত

ময়দানে শুকনো পাতা পোড়ানো নিয়ে কলকাতা পুরসভার কৈফিয়ত তলব করল জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় ডিভিশন বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার বিচারপতি এস পি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ-সদস্য রঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতার বায়ুদূষণের মামলায় পুরসভাকে যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪১
Share:

ময়দানে শুকনো পাতা পোড়ানো নিয়ে কলকাতা পুরসভার কৈফিয়ত তলব করল জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় ডিভিশন বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার বিচারপতি এস পি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ-সদস্য রঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতার বায়ুদূষণের মামলায় পুরসভাকে যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে। ময়দানে পাতা পোড়ানোর ঘটনায় এ দিন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতেও নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ আদালত।

Advertisement

ময়দানে পাতা ও জঞ্জাল পোড়ানো আগেই নিষিদ্ধ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। পরবর্তী কালে জাতীয় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধি অনুযায়ী, শহরে যে কোনও ধরনের জঞ্জাল পোড়ানোই নিষিদ্ধ। কিন্তু সে সব নিষেধ অগ্রাহ্য করেই ময়দানে পাতা পোড়ানো হচ্ছিল। সে ছবি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ দিন কলকাতার বায়ুদূষণের মামলার শুনানিতে আবেদনকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত সেই সব সংবাদপত্রের ছবির কাটিং জমা দেন। বিষয়টি আদালতের গোচরেও আনেন। ময়দান সাফাইয়ের দায়িত্ব কলকাতা পুরসভার। আদালত সূত্রের খবর, সেই দায়িত্বের কারণেই এই মামলায় পুরসভাকে যুক্ত করে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। ৮ মে-র মধ্যে এই জবাব পেশ করতে হবে।

জঞ্জাল, পাতা, টায়ার পোড়ানোর ফলে প্রচুর ধোঁয়া এবং কার্বন কণা নির্গত হয়। বাতাসে ভাসমান কণার (এরোসল) পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। পরিবেশের উপরে এর প্রভাব কতটা খারাপ, তা উঠে এসেছে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের সম্মেলনেও। এ দিন দার্জিলিংয়ে বোস ইনস্টিটিউটের আয়োজিত জলবায়ু বদল সংক্রান্ত আলোচনাচক্রে আইআইটি মুম্বইয়ের বিজ্ঞানী চন্দ্রা বেঙ্কটরমন জানান, ‘‘নির্দিষ্ট জায়গার বাতাসে এরোসলের পরিমাণ বেড়ে গেলে সেখানে বৃষ্টিপাত কমে যায়। বৃষ্টির চরিত্রও বদলে যায়।’’ বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, এই ধরনের দূষিত কণা, বিশেষত কার্বন কণা বাতাসে তাপশোষণ করে। ফলে মেঘ জমলেও তা পুরোপুরি ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টি ঘটাতে দেয় না। উল্টে বাতাসকে আরও গরম করে তোলে।

Advertisement

আরও পড়ুন...
বাতাসে কত বিষ, মাপা হবে শহরে

বর্তমানে এমনিতেই গরমে জ্বলে-পুড়ে মরছে মহানগর। সেই অবস্থায় বাতাসে কার্বনের পরিমাণ বাড়লে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

কলকাতায় বায়ুর মান এমনিতেই খারাপ বলে পরিবেশবিদেরা জানান। সেই বেহাল দশার কথা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র রিপোর্টেও একাধিক বার উঠে এসেছে। তার পরেও প্রশাসনের টনক নড়েনি। বায়ুদূষণ নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকায় এ দিন অসন্তোষ প্রকাশ করেছে পরিবেশ আদালতও। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, দূষণ বিধি ও নির্দেশিকা প্রশাসনের নিচুতলায় পৌঁছচ্ছে না। বায়ুদূষণ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে একসঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতেও বলেছে পরিবেশ আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন