Coronavirus Pandemic

পারমিটে এক বছর, পথ-করে ছ’মাসের ছাড় বাসমালিকদের

গত এক মাসে ডিজ়েলের মূল্য বৃদ্ধি এবং যাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ায় বেসরকারি বাস ও মিনিবাস সংগঠনগুলি সরকারের কাছে কর ছাড় এবং বাসের ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২০ ০২:২৮
Share:

—ফাইল চিত্র।

করোনার পরিবেশে বেসরকারি বাসের এক বছরের পারমিট ফি-তে ছাড় দিল রাজ্য। এ ছাড়াও ১ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছ’মাসের জন্য পথ কর-সহ অন্যান্য কর মকুব করার কথা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পথ কর বকেয়া আছে এমন বাস মিনিবাসের ক্ষেত্রে আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যে ওই কর মিটিয়ে দিলে কোনও জরিমানা লাগবে না। পাশাপাশি পরের ছ`মাসের জন্য কর ছাড়ের সুবিধাও মিলবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।

Advertisement

গত এক মাসে ডিজ়েলের মূল্য বৃদ্ধি এবং যাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ায় বেসরকারি বাস ও মিনিবাস সংগঠনগুলি সরকারের কাছে কর ছাড় এবং বাসের ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছিল। ভাড়া বৃদ্ধির দাবি না মেনে কলকাতায় ছ’হাজার বাসের জন্য এককালীন ১৫ হাজার টাকা করে তিন মাস সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু একাধিক সংগঠন তা নিতে অস্বীকার করে।

এ দিন মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাস মালিকদের সংগঠনগুলি কর ছাড়ের দাবি জানিয়েছিল। সেই মতো অর্থ দফতর বিষয়টি অনুমোদন দেওয়ায় ছাড় দেওয়া হল।” মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের সরকারি ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাস মালিক সংগঠনগুলিও। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটসের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত। বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা মন্দের ভাল। তবে দীর্ঘ মেয়াদে ভাড়া বাড়ানোই একমাত্র সমাধান।”

Advertisement

আরও পড়ুন: চিনা অনুপ্রবেশের নথি গায়েব প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওয়েবসাইট থেকে

মিনিবাস অপারেটর্স কোঅর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বপন ঘোষ বলেন, “কিছুটা সুরাহা হল। তবে ডিজ়েলের দাম না কমলে সমস্যা মিটবে না।” বাস মালিকদের দাবি, দূরপাল্লার বাসের ক্ষেত্রে জেলা প্রতি চার হাজার টাকা করে পারমিট ফি দিতে হয় প্রতিটি বাসকে। অর্থাৎ বাসটি যে সব জেলার মধ্যে দিয়ে যাবে, সেই অনুযায়ী পারমিট ফি ধার্য হয়। আবার বেসরকারি বাসের ক্ষেত্রে তিন মাসে ১৫১৬ টাকা এবং মিনিবাসের জন্য ১১০০-১৩০০ টাকা রোড ট্যাক্স পড়ে। দূরপাল্লার ক্ষেত্রে সেটি সাড়ে তিন-চার হাজার টাকা লাগে। সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, “এই সিদ্ধান্ত বাস মালিকদের ভরসা দেবে। তবে ফিটনেস সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রেও ছাড় পেলে ভাল হত।”

বাস ও মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত থেকে বোঝা যাচ্ছে বাস মালিকদের সমস্যার বিষয় নিয়ে সরকার ভাবিত। তবে যাত্রী পরিষেবা রক্ষার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রকে যৌথ ভাবে উদ্যোগী হতে হবে।’’

ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘রাজ্যের সিদ্ধান্তকে স্বাগত। কিন্তু কেন্দ্রের কাছে বেশ কয়েকটি দাবি জানানো হলেও এখনও কোনও সুরাহা হয়নি। তাই এ বার রাস্তায় নেমে আন্দোলনের পরিকল্পনা করছি।’’

আরও পড়ুন: এক দিনে রাজ্যে আক্রান্ত প্রায় ৩ হাজার, কলকাতায় মৃত ২৭​

নিজেদের আন্দোলনের অভিমুখ বদলে এ বার কেন্দ্রের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন বাস মালিকেরা। তাঁদের বিভিন্ন সংগঠনও নিজেদের মতো করে চিঠি পাঠাতে শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় পরিবহণমন্ত্রী কিংবা অর্থমন্ত্রীকে। কয়েকটি সংগঠন আবার নিজেদের দাবির কথা জানিয়েছে রাজ্যপালকেও। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের কাছে দাবিপত্র পাঠিয়েছে অল বেঙ্গল বাস ও মিনিবাস সমন্বয় সমিতি। রাহুল জানান, বিমার মেয়াদ বৃদ্ধি, ব্যাঙ্ক ঋণের কিস্তির উপরে সুদ মকুব, টোল ট্যাক্স মকুব-সহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement