বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
এক সপ্তাহের মধ্যে একই জায়গায় ঘটে গিয়েছে চারটি দুর্ঘটনা। মৃত এক এবং গুরুতর জখম তিন। যদিও এই প্রথম নয়। একই জায়গায় আগেও ঘটেছে দুর্ঘটনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, যে কারণে বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে তার সমাধান আজও হয়নি। উপরন্তু আরও তীব্র হয়েছে সমস্যা। এ বার পুরভোটের আগে উত্তর দমদম পুরসভার খলিসাকোটা এলাকায় সব দলের প্রার্থীদের কাছে এলাকাবাসীর প্রশ্ন ছিল, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধারে কবে আলো লাগানো হবে? কেন এখনও অন্ধকারে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারপার করতে হচ্ছে? সব দলের প্রার্থীরাই অবশ্য ওই রাস্তায় আলো লাগানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যদিও এই আশ্বাসের উপর ভরসা নেই এলাকাবাসীর। তাতে কতখানি কাজ হবে সেই নিয়ে সন্দিগ্ধ তাঁরা।
বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের এয়ারপোর্টের তিন নম্বর গেট থেকে খলিসাকোটা দু’নম্বর ব্লক। অভিযোগ, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের উত্তর দমদম পুর এলাকার এই অংশের বেশিরভাগ জায়গায় আলো নেই। রাতের অন্ধকারে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে তীব্র গতিতে আসা গাড়ির হেডলাইট দেখে পথচারীরা গাড়ির ঠিক অবস্থান বুঝতে পারেন না। ফলে রাস্তা পেরোতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। এর পাশাপাশি রাস্তার ধারে নির্মাণ দ্রব্য ফেলে রাখার সমস্যাও রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এয়ারপোর্ট তিন নম্বর গেটের কাছেই বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে যশোহর রোডে যাওয়ার যে উড়ালপুল রয়েছে তাতে ওঠার কোনও পথ নির্দেশিকা নেই। এর জন্য গাড়ির চালক বিভ্রান্ত হয়ে যান। ফলে হঠাৎ গা়ড়ির গতি কমে গেলে পেছন থেকে গাড়ি দ্রুতবেগে এসে ধাক্কা মারছে। সম্প্রতি এ ভাবেই গাড়ি ও ট্রাকের সংঘর্ষে গাড়ির আরোহীরা গুরুতর জখম হন। অন্য এক দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন ইলা চক্রবর্তী নামে এক মহিলা।
খলিসাকোটা এলাকার এক আবাসনের বাসিন্দা সমীরবরণ সাহা বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে এলাকায় জনসংখ্যা বেড়েছে। খলিসাকোটার বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধারে প্রচুর বহুতল হয়েছে। তৈরি হয়েছে মল, হোটেলও। অথচ পরিস্থিতির বদল হয়নি। এই নিয়ে উত্তর দমদম পুরসভার তৎকালীন পুরপ্রধান সুনীল চক্রবর্তীর কাছে লিখিত অভিযোগও করেছি। কোনও কাজ হয়নি।’’
যদিও সদ্য প্রাক্তন হওয়া পুরপ্রধান সুনীলবাবু বলছেন, ‘‘যশোহর রোডের ধারে আলো লাগানোর কাজ হয়েছে। তবে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধারে আলো লাগানোর দায়িত্ব জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের।’’ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা রাস্তা তৈরি করে দিয়েছি। এ বার রাস্তার ধারে আলো লাগানোর কাজ ওই এলাকার সংশ্লিষ্ট পুরসভাকেই করতে হবে।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দায়িত্ব নিয়ে এই চাপানউতোরে দিনের পর দিন যাচ্ছে। অথচ রাস্তায় আলো লাগানো হচ্ছে না। রাস্তার ধার থেকে সরানো হচ্ছে না নির্মাণ সামগ্রী। ফলে ক্রমেই ওই রাস্তা আরও দুর্ঘটনাপ্রবণ হচ্ছে। বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তার আশ্বাস, ‘‘রাস্তায় আলো লাগানো যখনই হোক পথ নির্দেশিকা দ্রুত লাগানো হবে। রাস্তার ধারে নির্মাণ সামগ্রী ফেলার বিষয়টি আগের তুলনায় কমেছে। রাতে পুলিশের গাড়ি টহল দিচ্ছে নিয়মিত। কেউ যেন রাতের অন্ধকারে ইট, বালি ফেলে যেতে না পারেন সে বিষয়ও নজরে রাখা হচ্ছে।’’