—প্রতীকী ছবি।
ভরসন্ধ্যায় পরপর ভারী কিছু পড়ার শব্দে চমকে উঠেছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বেরিয়ে এসে দেখেন, রক্তে ভেসে যাচ্ছে এক প্রৌঢ়া এবং এক যুবতীর দেহ। চিৎ হয়ে পড়ে থাকা যুবতীর বুকে শিশুকন্যা। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে ওই ব্যবসায়ীরাই তিন জনকে হাসপাতালে নিয়ে যান। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ পোস্তা থানা এলাকার বড়তলা স্ট্রিটের ঘটনা।
পুলিশ জানায়, ওই দুই মহিলার নাম সোহিনীদেবী কাপারিয়া (৬২) এবং ইন্দিরা মোহতা (৩০)। সোহিনী ইন্দিরার মা। আড়াই বছরের শিশু যুবাকি মোহতা ইন্দিরার সন্তান। ইন্দিরার চোখ বাঁধা ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সোহিনীকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ইন্দিরাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। মা ও মেয়ে ঝাঁপ দিয়েছেন না কি কেউ ঠেলে ফেলে দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে যান গোয়েন্দাপ্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠীও। বলেন, ‘‘ঘটনাটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
বছর ছয়েক আগে দক্ষিণ কলকাতার সাউথ সিটি আবাসনে ৩৪ তলার উপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন মা ও দুই মেয়ে। তাঁরা অবসাদে ভুগছিলেন বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বড়তলা স্ট্রিটের ১০ নম্বর বাড়ির নীচে সোহিনীদের পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ী মনীশ বিশ্ব, শশাঙ্ক বেরাত্রি বলেন, ‘‘আচমকা ভারী কিছু পড়ার শব্দ শুনে দেখি, এই ঘটনা। আমরাই হাসপাতালে নিয়ে যাই।’’ স্থানীয়রা জানান, ওই বাড়িতে ইন্দিরার বাবা চাঁদরতন, মা সোহিনীদেবী ও এক ভাই থাকেন। বাবা-ভাইয়ের কাপড়ের ব্যবসা। বছর চারেক আগে ইন্দিরার বিয়ে হয়। সাংসারিক বিবাদের ফলে বছর দেড়েক তিনি বাপের বা়ড়িতে।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, লাল রঙের পাঁচতলা বাড়ির উপরের তলায় কাপারিয়া পরিবারের বাস। পাঁচতলার ছাদে পাঁচিল নেই। ঘটনার আগে কোনও বিবাদ হয়েছিল কি না, তা জানার চেষ্টা করছেন পোস্তা থানার আধিকারিকেরা।