জামাইষষ্ঠীতে আদরের জামাইকে নিজে হাতে রান্না করে পাত পেড়ে খাওয়ানোর সাধ থাকলেও বয়সের ভারে সাধ্যি নেই শাশুড়ির। কিন্তু তাতে কী এসে যায়? জামাইবরণের আয়োজনে কোনও খামতি থাকছে না। সৌজন্যে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম। নলবন ফুড পার্কে ২৮ মে, রবিবার থেকে শুরু হওয়া ‘জামাইষষ্ঠীর মহাভোজ’ চলবে পাক্কা এক সপ্তাহ। আগামী ৪ জুন পর্যন্ত।
প্রিয় মাছটি জামাইবাবাজি যাতে বেছে নিতে পারেন, তার জন্য রুই-কাতলা-মৃগেলের গতানুগতিক পদ ছাড়াও থাকছে ইলিশ, চাপিলা, চ্যানোস, চিতল। গুগলি-প্রেমীদের জন্যও সুখবর! থাকছে গুগলি চপ, গুগলি কষা, গুগলি দো-পেঁয়াজা। গরমে ক্লান্ত জামাইয়ের পাতে থাকবে পান্তাভাতের সঙ্গে কাঁচা পেঁয়াজ ও শুকনো লঙ্কা ভাজা মেশানো আলুসিদ্ধ, গন্ধরাজ লেবু, পোস্তর বড়া।
জামাই পাত পেড়ে খাবেন, আর মেয়ে, শ্বশুর, শাশুড়ির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে না, তা কী হয়? খাবারের পদে তাঁদের জন্যও থাকছে বিশেষ ছাড়। রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘জামাইয়ের পাতে পছন্দসই মাছের পদ পৌঁছনোর পাশাপাশি মেয়ে ও শ্বশুর-শাশুড়ির জন্য থালাপ্রতি ১৫ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা থাকছে।’’
মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, নিগমের নিজস্ব জলাশয়ে টাটকা মাছ ধরে তা রান্নার ব্যবস্থা থাকছে। জামাই, মেয়ে, শ্বশুর, শাশুড়ির জন্য আলাদা আলাদা খাবারের পদ। বাসমতি চালের ভাত, ঘি, আলুভাজা, মাছের মাথা দিয়ে ডাল, তেলকই, চিংড়ির মালাইকারি থেকে শুরু করে থাকবে সরষে-ইলিশ, ফিস পাতুরি, ফিসফ্রাই, কাতলার কালিয়া, চিতল মাছের পেটি। চাটনি, পাঁপড়, দই ও রসগোল্লায় সারা যাবে মিষ্টিমুখ। আর ফলের রাজা আমের আস্বাদ তো থাকবেই শেষ পাতে। থালাপিছু দাম একশো টাকা থেকে শুরু করে চারশো টাকা পর্যন্ত। মৎস্য নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘‘জামাইকে ষষ্ঠীপুজোর মাধ্যমে শাশুড়ি যাতে আশীর্বাদ করতে পারেন, তার প্রথাগত দিকটাও থাকবে। নিগমের তরফে ব্যবস্থা থাকছে ধান, দূর্বা ও প্রদীপের।’’
ভোজন শেষে বিনামূল্যে একটি করে মিষ্টি পান, একটি মিষ্টি ও ঠান্ডা পানীয় দেওয়া হবে নিগমের তরফে। মৎস্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘বাঙালির ঘরে বারো মাসে তেরো পার্বণ। আমরা প্রতিটি উৎসব বিশেষ ভাবে পালন করতে উদ্যোগী। হারিয়ে যাওয়া মাছের পদ সস্তায় বাঙালির পাতে পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’’