অনলাইনে চাকরির নামে প্রতারণা

সংস্থার সূত্রে জানানো হয়, চুক্তিপত্র সই হলে কৌশিককে একটি অ্যাপ পাঠানো হবে। তা ফোনে ডাউনলোড করে কাজ করতে হবে।

Advertisement

স্যমন্তক ঘোষ

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৮ ০৩:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

অনলাইন চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার ঘটনা নতুন নয়। সম্প্রতি তেমনই এক প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পা দেন মধ্যবয়সি কৌশিক ভট্টাচার্য। পুরনো চাকরি ছেড়ে বিভিন্ন ‘অনলাইন জব পোর্টাল’-এ সিভি আপলোড করেছিলেন কৌশিক। তাঁর দাবি, তা দেখে ‘স্টোন টেকনোলজি’ নামে একটি সংস্থা ফোনে যোগাযোগ করে। তারা জানায়, গুজরাতে তাদের সদর দফতর। কৌশিককে অনলাইন চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

সংস্থার সূত্রে জানানো হয়, চুক্তিপত্র সই হলে কৌশিককে একটি অ্যাপ পাঠানো হবে। তা ফোনে ডাউনলোড করে কাজ করতে হবে। ‘টার্গেট’ পূরণ হলে কৌশিক চুক্তিভিত্তিক পারিশ্রমিক পাবেন। কিন্তু সময়ের মধ্যে কাজ জমা দিতে না পারলে ৫,২০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কৌশিকের কথায়, ‘‘ওদের চুক্তিপত্র পাঠাতে বলি। অনলাইন চুক্তিপত্র আসে। সেখানে ডিজিটাল সই করে ফেরত পাঠিয়ে দিই।’’

অভিযোগ, এর পরেই কৌশিককে অ্যাপ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তিনি কয়েক দিন সময় চাইলেও, রাতারাতি পাঠানো হয় কাজও। কিন্তু অ্যাপ ডাউনলোড করেই কৌশিক বুঝতে পারেন, সেটি ঠিকমতো কাজ করছে না। অভিযোগ, এর পরে বারবার সংস্থাটির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। ফোন, হোয়াটসঅ্যাপ, ই-মেলে— কোথাও উত্তর মেলেনি। ফলে কৌশিকও কাজ শেষ করতে পারেননি।

Advertisement

জুন মাসে সংস্থাটির তরফে তাঁকে ই-মেলে জানানো হয়, সময়ে কাজ শেষ করতে না পারার জন্য তাঁকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। উত্তরে কৌশিক মেল পাঠালে তার কোনও উত্তর মেলেনি বলে অভিযোগ। অভিযোগ, এর পরে ৪ জুন কৌশিককে ই-মেলে আইনি নোটিস পাঠিয়ে বেশ কয়েক হাজার টাকা দাবি করা হয়।

‘‘নোটিস পেয়ে ভয় পেয়ে যাই। যোগাযোগ করি এক আইনজীবীর সঙ্গে। তিনি বলেন, নোটিস ভুলে ভরা,’’ বক্তব্য কৌশিকের। আইনজীবী প্রসিত দেব দেখেছেন কৌশিকের নোটিস। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সংস্থাটির নামের বানান এক়-এক জায়গায় এক-এক রকম। এই প্রথম আইনি নোটিস দেখলাম, যেখানে আইনজীবীর ঠিকানা দেওয়া নেই। চিঠির উত্তর দেওয়া হবে কাকে?’’

গোটা বিষয়টি নেতাজিনগর থানায় জানাতে গিয়েছিলেন কৌশিক। অভিযোগ, থানা অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। তাঁকে লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানায় যেতে বলা হয়। এক পুলিশকর্তার বক্তব্য, ‘‘কলকাতা পুলিশের সাইবার মামলা সামলানোর জন্য আলাদা থানা আছে। স্থানীয় থানায় মামলা হলে সেই কাগজ ফের সাইবার থানায় পাঠাতে হয়। তাতে সময় ব্যয় হয়। কিন্তু বিষয়টি অভিযোগকারীকে বুঝিয়ে বলা এবং সাইবার থানায় পৌঁছতে সাহায্য করা উচিত ছিল।’’ কৌশিক অবশ্য দেরি না করে তাঁর অভিযোগপত্র থানায় রেজিস্ট্রি ডাকে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

এ নিয়ে একটি অনলাইন জব পোর্টালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, চাকরিপ্রার্থী এবং চাকরিদাতাদের বিজ্ঞাপন কেবল তারা আপলোড করেন। প্রোফাইল ঠিক, না ভুল, দেখার দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন