ঠাকুর দেখার উপরি দু’দিন, ঢল নামল মণ্ডপে

শনিবারই শুরু হয়ে গিয়েছিল বিসর্জন-পর্ব। কিন্তু তাতেও শহরবাসীর মণ্ডপ দর্শনে ভাটা পড়েনি। উৎসবের মেজাজ অক্ষুণ্ণ থেকেছে রবিবারেও। এ দিনও ভিড় জমেছে শহরের বিভিন্ন পুজোয়।

Advertisement

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০০:২৬
Share:

দর্শন: বৃষ্টি কমতেই রবিবার সন্ধ্যায় মণ্ডপমুখী জনস্রোত। সুরুচি সঙ্ঘে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

শেষ হয়েও যেন হলো না!

Advertisement

শনিবারই শুরু হয়ে গিয়েছিল বিসর্জন-পর্ব। কিন্তু তাতেও শহরবাসীর মণ্ডপ দর্শনে ভাটা পড়েনি। উৎসবের মেজাজ অক্ষুণ্ণ থেকেছে রবিবারেও। এ দিনও ভিড় জমেছে শহরের বিভিন্ন পুজোয়।

ভিআইপি রোডের শ্রীভূমি স্পোর্টিং থেকে নিউ আলিপুরের সুরুচি সঙ্ঘ— দর্শনার্থীদের ভিড়ে এ দিনও সরগরম ছিল বিভিন্ন বড় পুজোর মণ্ডপ। সন্ধ্যায় দেখা গেল, গোলাঘাটা থেকে বাঙুর পর্যন্ত বাঁশের ব্যারিকেডের ভিতরে দর্শকদের যে দীর্ঘ লাইন, তা অষ্টমী বা নবমীর ভিড়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে। একই ছবি শরৎ বসু রোড বা রাসবিহারী চত্বরেও।

Advertisement

উত্তরের কাশী বোস লেন কিংবা কলেজ স্কোয়ার থেকে দক্ষিণের দেশপ্রিয় পার্ক, ত্রিধারা বা বোসপুকুর— দশমীর সিঁদুর খেলার পরেও রবিবার ভিড়ে টক্কর দিয়েছে একে অপরকে। কয়েকটি বাড়ির পুজো এবং সাবেক পুজো ছা়ড়া শনিবার কলকাতার অধিকাংশ বড় পুজোর প্রতিমারই বিসর্জন হয়নি। প্রায় ৬৮টি বড় পুজো কাল, মঙ্গলবার রেড রোডে বিসর্জনের কার্নিভালে অংশ নেওয়ার পরে প্রতিমা বিসর্জন দেবে। তাই হাতে আরও দু’দিন সময় পাওয়া গিয়েছে। সেই সুযোগ ছাড়তে রাজি নন শহরবাসী।

অষ্টমী এবং নবমীতে দফায় দফায় বৃষ্টির জেরে অনেকের প্রতিমা দর্শনের পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছিল। সেই খামতি পূরণ করতেই চেতলা অগ্রণীর মণ্ডপে মেয়েকে নিয়ে হাজির বালিগঞ্জের সৌগত সেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘নবমীতে বেরোনোর কথা ছিল। কিন্তু সে দিন সকাল থেকে যা বৃষ্টি, তাতে আর বেরোতে পারিনি। এ দিন ছুটি থাকায় আর প্রতিমা বিসর্জন না হওয়ায় বেরিয়ে পড়েছি। মেয়ের খুব ইচ্ছে ছিল চেতলার মণ্ডপ দেখার।’’

পেশায় বহুজাতিক সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার। তাই অষ্টমী-নবমীতেও অফিসে যেতে হয়েছিল সৌরভ চট্টোপাধ্যায়কে। রবিবার ছুটি পেতেই বান্ধবীর সঙ্গে মণ্ডপ দর্শনে বেরিয়ে পড়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পুজোয় ছুটি পাইনি। এ দিন তাই জমিয়ে পরিকল্পনা করেছি। সারা রাত ঘুরব।’’

যাঁরা ভিড় এড়িয়ে ঠাকুর দেখতে একাদশীর সন্ধ্যাকে বেছে নিয়েছেন, তাঁদের পরিকল্পনা অবশ্য সফল হয়নি। ছেলেকে নিয়ে বাহুবলী দেখাতে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে গিয়ে ভিড় দেখে বিস্মিত হয়ে পড়েন বাগুইআটির তনিমা রায়। তিনি বলেন, ‘‘মহালয়া থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মণ্ডপ নিয়ে এত আলোচনা দেখছি। ভেবেছিলাম, দশমীর মধ্যে সকলের দেখা হয়ে যাবে। তার পরে ছেলেকে নিয়ে যাব। কিন্তু একাদশীর সন্ধ্যাতেও যে এত ভিড় হবে, ভাবতে পারিনি।’’

রবিবারের ভিড় সামলাতেও রাস্তায় হাজির কলকাতা পুলিশের বিশেষ বাহিনী। পুজোর দিনগুলির মতো এ দিনও পার্কিং থেকে রাস্তার উপরে হাঁটাচলায় ছিল বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা। তবে, সমস্যা হয়নি বলেই জানিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন