কলকাতার নার্সিং হোমে রোগিনীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
কলকাতার হাসপাতালে রোগিনীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠল গ্রুপ-ডি কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ফাঁকা কেবিনের সুযোগ নিয়ে অর্ধচেতন অবস্থায় থাকা রোগিনীকে চুম্বন করেন ওই কর্মচারী। মহিলার স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তের চাকরিও গিয়েছে।
দক্ষিণ কলকাতার একবালপুরের ঘটনা। সেখানে একটি নার্সিং হোমে ভর্তি ছিলেন মহিলা। তাঁর গলব্লাডারে অস্ত্রোপচারের কথা ছিল। মহিলার স্বামী জানিয়েছেন, গত ৩ অগস্ট তিনি হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন স্ত্রীকে। জেনারেল বেড থেকে তাঁকে কেবিনে নিয়ে যাচ্ছিলেন অভিযুক্ত গ্রুপ-ডি কর্মী। সেই সময়েই যৌন হেনস্থা করেন। মহিলা অর্ধচেতন অবস্থায় ছিলেন। কেবিনও ফাঁকা ছিল। অভিযুক্তসেই সুযোগ নিয়েছিলেন বলে দাবি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলাকে স্ট্রেচারে করে জেনারেল বেড থেকে চারতলার ডুয়েল কেবিনে নিয়ে যাচ্ছিলেন অভিযুক্ত। সেই সময় মহিলার ঠোঁটে চুম্বন করেন তিনি।
নির্যাতিতার স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পদক্ষেপ করে। এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু হয়। ঘটনার দিনেই নার্সিং হোম থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। পরে তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। ৭ অগস্ট পর্যন্ত তাঁর পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আপাতত তাঁকে একবালপুর থানায় রাখা হয়েছে।
৪ অগস্ট একবালপুরের ওই নার্সিং হোম থেকে অভিযুক্ত গ্রুপ-ডি কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিব়ৃতিতে জানান, রোগীর সঙ্গে অসম্মানজনক ব্যবহার করার জন্য তাঁকে বরখাস্ত করা হচ্ছে। কারণ কর্তৃপক্ষ কাজের জায়গায় পেশাদারিত্বকে প্রাধান্য দেন। এই ধরনের আচরণ তাই সহ্য করা হবে না।
কিছু দিন আগে গুরুগ্রামের এক হাসপাতালে আইসিইউ-এর ভিতরে পশ্চিমবঙ্গের এক বিমানসেবিকাকে ‘ডিজিটাল ধর্ষণের’ অভিযোগ উঠেছিল হাসপাতালের প্রযুক্তিকর্মীর বিরুদ্ধে। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে বেশ কিছু দিন ভর্তি ছিলেন বিমানসেবিকা। পরে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। জানান, হাসপাতালের কয়েক জন কর্মী আইসিইউ কেবিনে তাঁকে যৌন নির্যাতন করেছেন। তিনি আইসিইউ কেবিনে যখন কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না, সেই সময়ে তাঁকে যৌন নির্যাতন করা হয়। সেই সময় দু’জন নার্স উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তাঁরা অভিযুক্তদের বাধা তো দেননি। বরং সাহায্য করেছিলেন! উল্লেখ্য, ভিআর প্ল্যাটফর্ম, সমাজমাধ্যমের মতো ভার্চুয়াল কোনও জায়গায় যৌন হেনস্থা ‘ডিজিটাল ধর্ষণ’-এর আওতায় পড়ে। ভারতীয় আইনে এই ধরনের যৌন নির্যাতনকে ‘ডিজিটাল ধর্ষণ’ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। বিমানসেবিকাও সেই অভিযোগ তুলেছিলেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় মূল অভিযুক্তকে। এ বার কলকাতার হাসপাতালেও রোগিণীকে হেনস্থার অভিযোগ উঠল হাসপাতালের কর্মীর বিরুদ্ধে।