India on US Tariffs

‘অনেকেই করে, জরিমানা শুধু ভারতের!’ আমেরিকার ৫০% শুল্ক আরোপকে ‘অন্যায্য’ বলল কেন্দ্র, কঠোর বিবৃতি

ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের মার্কিন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ নয়াদিল্লি। এর বিরুদ্ধে কঠোর বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বুধবার বলা হয়েছে, আমেরিকার সিদ্ধান্ত ‘অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং অনর্থক’।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৫ ২১:১৪
Share:

(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ভারতের পণ্যে আমেরিকার বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের নিন্দা করল বিদেশ মন্ত্রক। কঠোর বিবৃতি দেওয়া হল বিদেশ মন্ত্রক থেকে। বুধবারই ভারতের উপর শুল্কের পরিমাণ দ্বিগুণ করে দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ। ভারত বিবৃতি দিয়ে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে। সঙ্গে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে।

Advertisement

বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বুধবার যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে আমেরিকার সিদ্ধান্তকে ‘অন্যায্য’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বিবৃতিটি সমাজমাধ্যমেও পোস্ট করেছেন। বিবৃতি অনুযায়ী, ‘‘গত কয়েক দিন ধরে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানিকে নিশানা করেছে আমেরিকা। আমরা এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছি। আমাদের আমদানি বাজারের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। ভারতের ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। অন্য অনেক দেশ জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে একই পদক্ষেপ করছে। তা সত্ত্বেও বাড়তি শুল্ক আরোপের জন্য আমেরিকা বেছে নিচ্ছে ভারতকে, যা দুর্ভাগ্যজনক। এই পদক্ষেপ অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং অনর্থক। আমরা এর প্রতিবাদ করছি। জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে ভারত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।’’

বুধবার ভারতের উপর শুল্কের নির্দেশিকায় স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। আগেই ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল ভারতীয় পণ্যে। তা ৭ অগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। বুধবারের বাড়তি ২৫ শতাংশের ফলে আগামী ২৭ অগস্ট থেকে ভারতকে আমেরিকায় রফতানি করতে হলে ৫০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। এই ঘোষণার পর আমেরিকার আরোপিত সর্বোচ্চ শুল্কের তালিকায় চলে এল ভারতের নাম। এ ছাড়া, ব্রাজ়িলের পণ্যের উপরেও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে তেলের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। তেল আমদানি করা হচ্ছে রাশিয়া থেকে। এই কারণেই ভারতের উপর এই বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হল।

Advertisement

নয়াদিল্লি আগেই এ বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করেছিল। বলা হয়েছিল, জাতীয় স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক বাজারদরের কথা মাথায় রেখে ভারত তার বাণিজ্যনীতি নির্ধারণ করে থাকে। অর্থাৎ, বাজারে কে কত দাম নিচ্ছে, সেই বিষয়টিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। রাশিয়া সস্তায় তেল বিক্রি করে বলেই ভারত তা কিনে থাকে। কিন্তু আমেরিকার বক্তব্য, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনার ফলে সেই টাকা ইউক্রেনে যুদ্ধ চালাতে কাজে লাগাচ্ছে মস্কো। যুদ্ধে অর্থসাহায্য হচ্ছে ভারতের দেওয়া টাকায়।

২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল। এখনও পূর্ব ইউরোপে দুই দেশের যুদ্ধ চলছে। রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রতিবাদে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি বিশ্ব তাদের উপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে রুশ বাণিজ্য যে কারণে বড়সড় ধাক্কা খায়। সেই সময়ে রাশিয়া সস্তায় খনিজ তেল বিক্রি শুরু করে। জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল সেই সময়। ভারত সারা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ। এই মুহূর্তে ভারত যে তেল আমদানি করে তার ৩৫ শতাংশই রাশিয়া থেকে। আমেরিকার লাগাতার হুমকির মুখেও এখনও পর্যন্ত রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধের কথা বলেনি নয়াদিল্লি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement