আক্রান্ত পুলিশকর্মী। নিজস্ব চিত্র।
পুলিশের হাতে পুলিশকর্মীর প্রহৃত হওয়ার ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরেও গ্রেফতার করা যায়নি দুই মূল অভিযুক্তকে। যাঁদের মধ্যে এক জন কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের সার্জেন্ট। এই ঘটনার জেরে শনিবার গ্রেফতার হওয়া অন্য দুই অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে পুলিশকর্মী আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় পুলিশেরই ভূমিকা নিয়ে এ বার প্রশ্ন উঠছে। আক্রান্তের ছেলে ঋষিকেশ সিংহ রবিবার বলেন, ‘‘যাদবপুর থানার তরফে তদন্ত হচ্ছে জানালেও আমরা কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। যাঁদের ধরা হয়েছিল তাঁরাও জামিন পেয়ে গিয়েছেন।’’
প্রকাশ্যে মদ্যপান এবং তারস্বরে মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করায় গত শুক্রবার, দশমীর রাতে টালিগঞ্জ পুলিশ কোয়ার্টার্সে রাজ্য পুলিশের এএসআই সুখসাগর সিংহ নামে এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। আনিস হানজা, বুবাই সামন্ত, সিদ্ধার্থ পাল এবং শিবকুমার সিংহ নামে চার জনের বিরুদ্ধে যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে সুখসাগরের পরিবার। এর পরে শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছিল পেশায় দমকলকর্মী বুবাই এবং কলকাতা পুলিশের হোমগার্ড শিবকুমারকে। তবে পুলিশের দাবি, ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের সার্জেন্ট এবং এই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত আনিস। অপর অভিযুক্ত, গাড়ি সংস্থার কর্মী সিদ্ধার্থ টালিগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সুখসাগরের পরিবারের দাবি, পুলিশ আবাসনে জে-১ ব্লকের পিছনে মদ্যপানের আসর বসে প্রতিদিন। পুজোর দিনে এর প্রতিবাদ করায় সুখসাগরকে মারধর করেন অভিযুক্তেরা। ঋষিকেশের কথায়, ‘‘বাবা চন্দননগর পুলিশ কমিশনারের রক্ষী। একাদশীতে ডিউটি ছিল। দশমীর রাতে আবাসনে তারস্বরে মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান হচ্ছিল। সঙ্গে লোকগুলো প্রকাশ্যে মদ্যপান করছিলেন। বাবা পুজো কমিটির লোকজনকে বিষয়টি জানান। তাঁরা গিয়ে বাধা দেওয়ায় পরে বাবাকে মেরেছে।’’ সূত্রের খবর, সুখসাগরের মাথায় ও চোখে চোট লেগেছে।
সুখসাগরের পরিবারের অভিযোগের তির পুলিশ আবাসনের কেয়ারটেকার তারক দাসের দিকেও। তাঁদের দাবি, তারকবাবুকে বারবার জানানো হলেও প্রকাশ্যে মদ্যপানের বিরুদ্ধে তিনি কিছুই করেননি। এমনকি ঘটনার দিন তিনি সেখানে উপস্থিত থাকলেও কোনও সাহায্য করেননি। তবে তারকবাবু এই অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘কিছু দিন থেকে কাজের সূত্রে বাইরে রয়েছি। ঘটনার সময় আবাসনে ছিলাম না। কী থেকে কী হয়েছে বলতে পারব না।’’
কলকাতা পুলিশের তরফে এ বিষয়ে এ দিন রাত পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি। যাদবপুর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক বলেন, ‘‘উঁচুতলার নির্দেশ আছে। এ নিয়ে কিছু বলতে পারব না।’’