নিয়ম ভেঙে বাজি ফাটালে শাস্তিতে জোর

বৈঠকের পরে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য সচিব রাজেশ কুমার বলেন, ‘‘প্রয়োজন হলে শুধু আইনানুগ ব্যবস্থাই নয়, নিয়মভঙ্গকারীর থেকে পরিবেশগত ক্ষতিপূরণও আদায় করব। যেখানে যা প্রয়োজন, সেটাই করা হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:০৫
Share:

দক্ষিণ শহরতলির একটি দোকানে বিকোচ্ছে শব্দবাজি। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

নিয়ম ভেঙে বাজি ফাটালে পরিবেশ সুরক্ষা বিধি অনুযায়ী আইনভঙ্গকারীর জেল বা জরিমানা হতে পারে। এমনকি, নিয়ম লঙ্ঘন হতে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে মামলা করা হবে। রবিবার শহরের বহুতল আবাসনগুলির প্রতিনিধি, পুলিশের সঙ্গে এক বৈঠকে এমনটাই জানাল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। কোন কোন বহুতলে লাগামছাড়া বাজি ফাটানো হচ্ছে, সে দিকে নজরদারি চালাতে গত বছরের মতোই ড্রোন ব্যবহারের জন্য কলকাতা পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছে পর্ষদ। বৈঠকে উপস্থিত অধিকাংশের বক্তব্য, অন্য বার পর্ষদের তরফে সচেতনতা প্রচারেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ বার কড়া শাস্তির বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে।

Advertisement

বৈঠকের পরে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য সচিব রাজেশ কুমার বলেন, ‘‘প্রয়োজন হলে শুধু আইনানুগ ব্যবস্থাই নয়, নিয়মভঙ্গকারীর থেকে পরিবেশগত ক্ষতিপূরণও আদায় করব। যেখানে যা প্রয়োজন, সেটাই করা হবে।’’

পরিবেশকর্মীদের বক্তব্য, শুধু সচেতনতার প্রচারে যে শব্দবাজিকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না, সেটা গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় বুঝেছে পর্ষদ। এ বার তাই শাস্তির বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নিয়মভঙ্গকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিয়ে পরিবেশকর্মীদের তরফে দাবি ছিল আগেই। এ দিন পর্ষদের বক্তব্যেও সেই একই সুর শোনা গিয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সম্পাদক নব দত্ত বলেন, ‘‘পরিবেশ সুরক্ষা আইনের ১৫ নম্বর ধারায় সর্বোচ্চ এক লক্ষ টাকা জরিমানা বা সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাবাসের কথা বলা হয়েছে। আইনে সে ব্যবস্থাও আছে। কয়েকটি শাস্তির দৃষ্টান্ত থাকলে একটা কড়া বার্তা যাবে। এ দিন পর্ষদ শাস্তির কথা স্পষ্ট করে বলে ভালই করেছে। দেখা যাক কী হয়!’’

Advertisement

শব্দবাজি নিয়ে যাতে কোনও ধোঁয়াশা না থাকে, তাই কোন বাজি নিষিদ্ধ, বাজিবাজার-সহ কোন কোন লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকান থেকে তা কেনা যাবে, তা বিস্তারিত ভাবে পর্ষদের তরফে বলা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি বহুতল আবাসনগুলির জন্যও সেই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বাকি তথ্য পর্ষদের ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। বহুতল আবাসনের এক প্রতিনিধির বক্তব্য, ‘‘আবাসনের কেউ হয়তো নিষিদ্ধ বাজি ফাটালেন। কিন্তু সেটা না জানায় অনেক সময়েই পদক্ষেপ করা যায় না। তালিকা থাকলে সুবিধা হবে।’’ পর্ষদ এ-ও জানিয়েছে, আগে ৪৮টি বাজির কারখানাকে লাইসেন্স দেওয়া ছিল। চলতি বছরে নির্ধারিত নিয়ম না মানায় ২৩টি বাজি প্রস্তুতকারী কারখানার লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।

পর্ষদ সূত্রের খবর, ছোট-বড় মিলিয়ে এ দিন প্রায় ১৩০টি আবাসনের প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। পর্ষদের তরফে একটি লিফলেট ওই প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেখানে সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুসারে যেমন রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অনুমোদিত বাজি ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে, তেমনই সাউন্ড বক্স বা মাইকে বাধ্যতামূলক ভাবে সাউন্ড লিমিটর লাগানোর কথাও বলা হয়েছে। এক পর্ষদকর্তার কথায়, ‘‘বৈঠকে প্রতিনিধিরা নিজেদের বক্তব্য বলেছেন। আমাদের তরফে থেকেও বলা হয়েছে। তবে সকলে সক্রিয় না হলে শব্দতাণ্ডব ঠেকানো যাবে না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন