আহত রাজীব সরকার। —নিজস্ব চিত্র।
কখনও প্রকাশ্য রাস্তায় চোলাই বিক্রির প্রতিবাদ করা। কখনও আবার পানশালায় নাচগানের আড়ালে দেহ ব্যবসা চলার অভিযোগ করে আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের— এহেন নানান প্রতিবাদী কর্মকাণ্ডের জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি কার্যত দুষ্কৃতীদের ‘হিট-লিস্ট’-এ। আশঙ্কা সত্যি হল সোমবার বেশি রাতে যখন মামলা করার জেরে বাড়ির সামনেই এক দল দুষ্কৃতী বাঁশ আর লোহার রড দিয়ে পেটাল বাগুইআটির বাসিন্দা সমাজকর্মী রাজীব সরকারকে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাত থেকে রেহাই পাননি তাঁর বন্ধু রজত মহুরিও। রাজীবের মাথায় তিনটি আর রজতের মাথায় আটটি সেলাই পড়েছে।
পুলিশ জানায়, বাগুইআটির পাঠশালা এলাকার বাসিন্দা রাজীব সোমবার রাতে তাঁর বন্ধু রজতকে ছাড়তে বাড়ির বাইরে এসেছিলেন। সেই সময় তাঁকে পিছন থেকে ঘিরে ফেলে কয়েক জন দুষ্কৃতী। তার পরে প্রথমে লোহার রড দিয়ে রাজীবের মাথায় আঘাত করে দুষ্কৃতীরা। রাজীব রাস্তায় পড়ে গেলে তার ওপরে বাঁশ নিয়ে চড়াও হয় সকলে। রাস্তায় ফেলে বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয় রাজীবকে।
ভিআইপি রোডের ধারে বিভিন্ন পানশালায় নাচগানের আড়ালে দেহ ব্যবসা হয়— এমন অভিযোগ করে উচ্চ আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেন রাজীব। সেই মামলার শুনানি আগামী ৩০ জুলাই। পানশালাগুলিকে কেন্দ্রে করে দেহ ব্যবসা ও নারী পাচার হচ্ছে বলে গত মার্চ মাসেই রাজীব ও তাঁর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফ থেকে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছিল বলে রাজীবের দাবি। ঘটনার প্রেক্ষিতে যে কোনও সময় তাঁদের ওপরে হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কা করে পুলিশ-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন মহলেই জানানো হয়েছিল।
কিন্তু, তাতেও যে কোনও কাজ হয়নি গত কালের হামলার ঘটনা থেকেই তা স্পষ্ট। রাজীব বলেন, “আমাকে মারতে মারতে বারবারই ছেলেগুলো বলছিল, আমি মারা গেলে, মামলাও শেষ হয়ে যাবে। আমি মামলার রায়ের দিকে চেয়ে রয়েছি।’’