প্রতীকী ছবি।
ভুল চিকিৎসায় এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালালেন তাঁর পরিজনেরা। অভিযুক্ত চিকিৎসককে গ্রেফতারের দাবিতে প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরোধ করা হল হাওড়া-আমতা রোড। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার বাঁকড়া এলাকার কবরতলায়। অবরোধের জেরে তীব্র যানজট হয় সদাব্যস্ত ওই রাস্তায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৮ এপ্রিল রবিবার রাতে পেটে ব্যথা নিয়ে বাঁকড়ার ওই নার্সিংহোমে ভর্তি হন পেশায় কাঠের মিস্ত্রি, অমিত সর্দার নামে বছর চব্বিশের এক যুবক। তাঁর বাড়ির লোকের অভিযোগ, চিকিৎসকেরা অমিতের অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়েছে জানিয়ে পরের দিনই অস্ত্রোপচার করেন। কিন্তু অস্ত্রোপচারের এক দিন পর অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে ওই যুবকের শরীরে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে। অমিতের মা কানন সর্দার বলেন, ‘‘মঙ্গলবার থেকেই ওর শরীর খারাপ হতে শুরু করে। আমি দেখা করতে গেলে বলেছিল, বুকে খুব কষ্ট হচ্ছে। পেটেও ব্যথা করছে।’’
অমিতের দাদা সুজয় সর্দার জানান, যে চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করেছিলেন তিনি বুধবার রাতে সাড়ে ১২টা নাগাদ তাঁদের ফোন করে জানান, অমিতের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ফজিরবাজারের কাছে একটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। সুজয়ের কথায়, ‘‘ওই খবর পেয়েই আমি এবং আমার কাকা দূতকুমার সর্দার ওই হাসপাতালে ছুটে যাই। সঙ্গে যান পাড়ার ছেলেরাও। সেখানে গিয়ে শুনি, ভাই মারা গিয়েছে।’’
ওই যুবকের মৃত্যুর খবর বৃহস্পতিবার কবরতলায় ছড়িয়ে পড়তেই উত্তেজনা ছড়ায়। অমিতের পরিজনেদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারা দল বেঁধে নার্সিংহোমে গিয়ে ভাঙচুর শুরু করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, ওই নার্সিংহোমে এর আগেও একাধিক বার ভুল চিকিৎসায় রোগী-মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত চিকিৎসককে গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা থেকে হাওড়া-আমতা রোড আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। দুপুর ১টা পর্যন্ত চলা ওই বিক্ষোভে যানজট ছড়িয়ে পড়ে এক দিকে দাশনগর ও অন্য দিকে ছ’নম্বর জাতীয় সড়ক পর্যন্ত।
অমিতের মৃত্যুর কারণ জানতে বাঁকড়ার ওই নার্সিংহোমের চিকিৎসককে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এসএমএসেরও উত্তর আসেনি। অন্য দিকে, ফজিরবাজারের কাছে যে হাসপাতালে ওই যুবকের চিকিৎসা চলছিল, সেখানকার চিকিৎসক রাজর্ষি সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ওই যুবককে যখন হাসপাতালে আনা হয়েছিল, তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ছিল। জন্ডিসও ধরা পড়েছিল। শেষে মাল্টি-অর্গান ফেলিওরের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়।’’ পুলিশ জানিয়েছে, রোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।