midday meal

মিড-ডে মিলে নিকৃষ্ট সামগ্রী, চিঠি ডিএম-কে

বারাসতের দু’নম্বর ব্লকে মাদ্রাসা ও স্কুল মিলিয়ে মিড-ডে মিলের সামগ্রী পায় মোট ২৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২১ ০৭:৩২
Share:

অভিযোগ এমন খাবার নিয়েই। নিজস্ব চিত্র।

কাঁচা মুসুর ডালের হলদেটে চেহারা দেখে ডালমুট বলে ভ্রম হবে। প্যাকেটবন্দি ছোলায় মিশে রয়েছে ছোট ছোট কাঠি। জলে ভেজালে ভেসে উঠছে পোকা ধরা ছোলা। সয়াবিনের অবস্থাও তথৈবচ। মিড-ডে মিলের খাদ্যসামগ্রীর এমন দশা দেখে প্রবল অসন্তোষ তৈরি হয়েছে বারাসত-২ ব্লকের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের মধ্যে। তাঁদের ক্ষোভের মুখে পড়ে শিক্ষকেরা জেলাশাসক সুমিত গুপ্তের দফতরে চিঠি পাঠিয়ে খাদ্যসামগ্রীর গুণমান ঠিক রাখার আবেদন জানিয়েছেন।

Advertisement

বারাসতের দু’নম্বর ব্লকে মাদ্রাসা ও স্কুল মিলিয়ে মিড-ডে মিলের সামগ্রী পায় মোট ২৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া, অবৈতনিক ও শিশু শিক্ষা কেন্দ্র মিলিয়ে রয়েছে আরও ১২৫টি স্কুল‌। সব মিলিয়ে ৩৩ হাজারেরও বেশি পড়ুয়া মিড-ডে মিল পায়।

গত বছর লকডাউনের সময় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের বাড়িতেই মিড-ডে মিলের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সর্বশিক্ষা মিশন ও রাজ্য সরকার। ঠিক হয়, ওই বাবদ টাকা স্কুলগুলির তহবিলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বারাসত-২ ব্লকের একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ১৪ দফায় খাদ্যসামগ্রী বণ্টন করা হয়েছে। কিন্তু ১২ এবং ১৪ নম্বর দফার ক্ষেত্রে সেই সামগ্রীর মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

এক প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘‘ওই দুই দফায় বিডিও-র দফতর ছোলা, সয়াবিন ও ডাল সরবরাহের দায়িত্ব নিয়েছিল। ১৪ নম্বর দফার খাদ্যসামগ্রী বণ্টন হয় মে মাসে। ওই দুই দফার মিড-ডে মিল নিয়েই অভিভাবকেরা অসন্তুষ্ট।’’ বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, চাল ও চিনির দায়িত্ব তাঁদের হাতেই রয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে ছোলা, ডাল এবং সয়াবিনের মান নিয়ে।

শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, জেলার সর্বত্র স্কুল কর্তৃপক্ষই খাদ্যসামগ্রী কিনে বণ্টনের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু দু’টি দফায় সেই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটেছে। এক শিক্ষকের অভিযোগ, ‘‘সরকারের দেওয়া টাকার মধ্যে সেই সামগ্রীর পরিবহণ এবং তা প্যাকেটবন্দি করার খরচও ধরা থাকে। কিন্তু অনেক স্কুলকেই বিডিও-র দফতরের ঠিক করা ডিলারের কাছে গিয়ে ডাল, ছোলা সংগ্রহ করতে হচ্ছে। তার জন্য অতিরিক্ত খরচ স্কুলের নিজস্ব তহবিল থেকে যাচ্ছে।’’

শিক্ষকদের দাবি, সরকার ২৫০ গ্রাম মুসুর ডালের জন্য ২৫, ২০০ গ্রাম সয়াবিনের জন্য ৪০ এবং প্রতি কিলো ছোলার জন্য ৬৫ টাকা বরাদ্দ করেছে। এক শিক্ষকের বক্তব্য, ‘‘ওই দামে উৎকৃষ্ট মানের সামগ্রী পাওয়ার কথা। কিন্তু সয়াবিন দেওয়া হচ্ছে স্থানীয় সংস্থার। ডাল ভেঙে যাচ্ছে। ছোলায় ভর্তি পোকা।’’ বারাসত-২ ব্লকের বিডিও অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার কাছে অভিযোগ আসেনি। উপর মহল থেকে নির্দেশ এলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’ জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, ‘‘মিড-ডে মিলের খাবার যে-ই সরবরাহ করুন, গুণমান অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। খোঁজ নিয়ে দেখছি, কী ঘটেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন