আমরি-র ঘটনায় রিপোর্ট কেন ১০ দিনে, প্রশ্ন

বুধবার মুকুন্দপুরের আমরি হাসপাতালে মারা যায় আড়াই বছরের ঐত্রী দে। পরিবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলে। এর পরে ইউনিট-হেড জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায় পরিবারের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:০০
Share:

মায়ের কোলে ঐত্রী। — ফাইল চিত্র।

ঘটনার পরে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, দু’দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা পড়বে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কাটতেই বদলে গেল সেই সিদ্ধান্ত। জানানো হল, রিপোর্ট জমা পড়বে ১০ দিনের মধ্যে।

Advertisement

প্রশ্ন উঠছে, কেন এই দেরি? অভিযোগের তাৎপর্য বুঝে কি আরও দ্রুত খতিয়ে দেখা জরুরি ছিল না?

বুধবার মুকুন্দপুরের আমরি হাসপাতালে মারা যায় আড়াই বছরের ঐত্রী দে। পরিবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলে। এর পরে ইউনিট-হেড জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায় পরিবারের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন বলে অভিযোগ। হুমকির সুরে বলেন, ‘‘মস্তানি করবেন না। আমার থেকে বড় মস্তান কেউ নেই।’’ তার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাসপাতাল-চত্বর।

Advertisement

ঘটনার তদন্তে শুক্রবার অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠন করেন আমরি কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানিয়েছিলেন, চিকিৎসক, সিস্টার-ইন-চার্জকে নিয়ে গড়া ছ’জনের ওই কমিটি দু’দিনে রিপোর্ট দেবে। কিন্তু শনিবারই সিদ্ধান্ত বদলে জানানো হয়, রিপোর্ট জমা পড়বে দশ দিনের মধ্যে। তার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন সিদ্ধান্তের পরিবর্তন, সে সম্পর্কে হাসপাতালের তরফে কিছু জানানো হয়নি।

রবিবার হাসপাতালের সিইও রূপক ব়ড়ুয়া জানান, দু’দিনের মধ্যে তদন্ত-কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল তাৎক্ষণিক। তাঁরা জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আরও সময় দরকার। রূপকবাবুর কথায়, ‘‘বুধবার যে কর্মী ও চিকিৎসকেরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন তদন্তকারীরা। ভিডিও ফুটেজ দেখা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি যাচাই করা হবে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, কাজ সম্পূর্ণ করতে দিন দশেক সময় লাগবে।’’

কিন্তু চিকিৎসায় গাফিলতিতে শিশু-মৃত্যু ও কর্তৃপক্ষের খারাপ ব্যবহারের মতো অভিযোগের রিপোর্ট আরও দ্রুত হওয়া জরুরি নয় কি? কর্তৃপক্ষ জানান, অভিযোগ গুরুতর। দ্রুত কাজ করতে গিয়ে যাতে কিছু বাদ না পড়ে, তাই সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কমিটি কাজও শুরু করেছে।

শনিবার বাইপাসে মোমবাতি মিছিল করে ঐত্রীর পরিবার। পরে হাসপাতালের সামনে অবস্থানে বসেন তাঁরা। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে সন্তানদের হারিয়েছেন যে বাবা-মায়েরা, তাঁরাও যোগ দেন। তাঁদেরও অভিযোগ, তাঁদের সন্তানেরা চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে মারা গিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই কর্মসূচি দেখেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আন্দাজ করতে পেরেছিলেন, ঘটনার গুরুত্ব বাড়ছে। তাই ঘটনার রেশ কেটে যাওয়ার পরেই রিপোর্ট বার করতে চান তাঁরা।

যদিও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ঐত্রীর পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে বুধবারেই তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব অভিযোগ তাঁরা তুলে নিয়েছেন। কিন্তু, তদন্ত নিরপেক্ষ হওয়া জরুরি। তাই তদন্ত কমিটি যে সময় চেয়েছে, সেটাই দেওয়া হয়েছে।

রবিবার বিকেলে পূর্ব যাদবপুর থানায় গিয়েছিলেন চিকিৎসক জয়তী সেনগুপ্ত। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে, জয়তীদেবী কোনও মন্তব্য করেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement