দাবি: দেহ নিয়ে পথে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
গুলি-কাণ্ডে দুষ্কৃতীর গ্রেফতারির দাবিতে মৃতদেহ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে দমদম রোড অবরোধ করলেন নিহত অভিজিৎ মল্লিকের পরিজনেরা। প্রায় ঘণ্টাখানেক চলা ওই অবরোধে ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার রাতে দমদমের শেঠবাগানে রাস্তায় একটি গাড়িতে মদ্যপান করছিল দাগি দুষ্কৃতী বড় পকাই এবং ছোট পকাই। সে সময়ে ওই রাস্তা দিয়ে মোটরবাইক নিয়ে যাচ্ছিল চন্দন নামে এক ব্যক্তি। তাকে দাঁড় করিয়ে বড় পকাই বলে অভিজিৎ ও পুচুকে ডেকে আনতে। তারা আসার পরে পাঁচ জনে মিলে গাড়িতে বসেই মদ্যপান করে। চন্দন পুলিশকে জানিয়েছে, এর পরে ওই গাড়িটি নিয়েই তারা যায় মধ্যমগ্রামের বিধান পল্লিতে বড় পকাইয়ের মামাবাড়িতে। সেখানে আর এক প্রস্ত মদ্যপানের আসর বসে। ওখানেই বড় পকাই অভিজিৎকে গুলি করে বলে অভিযোগ। বুধবার সন্ধ্যায় আর জি কর হাসপাতালে মারা যান ওই যুবক।
বৃহস্পতিবার রাতে অভিজিতের দেহ আসার পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন দমদমের বহিরাগত কলোনির বাসিন্দারা। পেশায় টোটোচালক অভিজিৎ ওই কলোনিরই বাসিন্দা ছিলেন। রাত আটটা নাগাদ দমদম স্টেশনের কাছে চিড়িয়ামোড়গামী রাস্তায় শববাহী যান রেখে শুরু হয় অবরোধ। বড় পকাইয়ের গ্রেফতারির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। খবর পেয়ে আসে দমদম থানা ও নাগেরবাজার ট্র্যাফিক পুলিশ। তারা অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু, নিহতের পাড়ার লোক দাবিতে অনড় ছিলেন।
এক সময়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বাসিন্দারা। প্রায় ৫০ মিনিটের টানাপড়েনে নাগেরবাজার থেকে চিড়িয়ামোড়ের রাস্তায় পরপর গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। ব্যাহত হয় অটো চলাচল। মেট্রো এবং ট্রেনের অফিস ফেরত যাত্রীরা চূড়ান্ত দুর্ভোগের শিকার হন। পুলিশ দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, দুষ্কৃতীমূলক কাজকর্মের জেরে কিছু দিন এলাকা ছাড়া ছিল বড় পকাই। সম্প্রতি সে ফের এলাকায় ঢুকতে শুরু করেছে। কয়েক দিন আগে দক্ষিণ দমদম পুরসভার বহিরাগত কলোনিতে শূন্যে গুলি চালানোর একটি ঘটনাতেও বড় পকাই অভিযুক্ত ছিল জানিয়েছেন বাসিন্দারা। এর পরে অভিজিতের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁদের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে।
এ দিনই অভিজিতের মৃত্যুর তদন্ত করার জন্য মধ্যমগ্রাম থানাকে নির্দেশ দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত। বিকেলে ঘটনার তদন্তের নথি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিজিৎ জানিয়েছিলেন, তিনি চিৎপুর থানা এলাকার সেভেন ট্যাঙ্কসের কাছে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। কিন্তু তদন্তে জানা যায়, মধ্যমগ্রামে গুলি করা হয় অভিজিৎকে।