ধৃত দুই অভিযুক্ত। রবিবার। — নিজস্ব চিত্র।
রাতের রাস্তায় ছুটছে দু’টি মোটরবাইক। সামনের বাইকে হেলমেটহীন দুই যুবক। পিছনেরটিতে দুই পুলিশকর্মী। ধাওয়া করে পুলিশকর্মীরা যখন অন্য বাইকটি ধরে ফেলেছেন, তখনই তাঁদের চলন্ত মোটরবাইকে সজোরে লাথি মারল এক যুবক। বাইক-সহ ছিটকে পড়লেন দুই পুলিশকর্মী। অভিযুক্তেরা পালানোর চেষ্টা করলেও স্থানীয় বাসিন্দারাই পরে ধরে ফেললেন তাঁদের।
শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে গল্ফ গ্রিনে। ধৃতদের নাম অভিজিৎ সিংহ ও অমিতাভ দাস। অভিজিৎ বাইক চালাচ্ছিল। অভিযোগ, ওই ঘটনার আগে আর এক পুলিশকর্মীর পায়ের উপর দিয়ে বাইক চালিয়ে দেয় তারা। ধৃতদের রবিবার পুলিশি হেফাজত দিয়েছে আলিপুর আদালত।
পুলিশ জানায়, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ গল্ফ গ্রিনে দূরদর্শন ভবনের সামনে গাড়ির নথি পরীক্ষা করছিলেন যাদবপুর থানার পুলিশকর্মীরা। সেই সময়ে দ্রুত গতিতে মোটরবাইকে যাচ্ছিল অভিযুক্তেরা। তাদের আটকালে বচসা জুড়ে দেয় তারা। অভিযোগ, আচমকাই কনস্টেবল নিমাইচন্দ্র মণ্ডলের পায়ের উপর দিয়ে বাইক চালিয়ে দেয় অভিজিৎ। কিছুটা দূরে গিয়ে পুলিশকে লক্ষ করে অশ্রাব্য গালিগালাজও করে। এর পরেই সাব ইনস্পেক্টর অরিন্দম পাণ্ডা ও কনস্টেবল রবি সিংহ অন্য একটি মোটরবাইকে তাদের ধাওয়া করেন। প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে শ্রীকলোনি লায়েলকা পুকুরের কাছে দু’টি বাইক কাছাকাছি আসতেই পুলিশের মোটরবাইকে লাথি মারে এক অভিযুক্ত। ছিটকে পড়েন অরিন্দম ও রবি। যাদবপুর থানার ওসি বিজয় সিংহ, অতিরিক্ত ওসি দেবাশিস দত্তের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। এলাকাবাসীরা ওই দু’জনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বুকে আঘাত নিয়ে এসআই অরিন্দম পাণ্ডা হাসপাতালে ভর্তি। কনস্টেবল রবি সিংহকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ২০১৪-র নভেম্বরেও কসবায় হেলমেটহীন এক বাইক চালককে আটকাতে গিয়ে প্রহৃত হন অরিন্দম পাণ্ডা। তখন অভিযুক্তদের মারে তাঁর হাত ভেঙে যায়।
শহরের বুকে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চালাতে গিয়ে বারবারই আক্রান্ত হয়েছে পুলিশ। তালিকায় শেষতম সংযোজন গল্ফ গ্রিন। তবে লালবাজার সূত্রের খবর, এতে তল্লাশি অভিযান বন্ধ হবে না। প্রতিটি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রাতে মূল রাস্তার মাঝে গার্ডরেল বসিয়ে নথি পরীক্ষা হবে।