হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে শিবম। নিজস্ব চিত্র
অঙ্ক পরীক্ষা চলার সময়ে শিক্ষকের মারে গুরুতর জখম হল সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র। মঙ্গলবার, মধ্য হাওড়ার বনবিহারী বসু রোডের একটি স্কুলে। জখম ছাত্রের নাম শিবম সাউ। বাড়ি রাজবল্লভ সাহা লেনে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই ছাত্রকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, পাঁজরে জোরাল আঘাত লাগায় তার তিনটি হাড়ে চিড় ধরেছে। ওই ছাত্রের পরিজনেরা হাওড়া থানায় গোপাল কৃষ্ণ নামে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ, ওই অঙ্ক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট টিউশন না পড়তে যাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই তিনি শিবমকে নানা অজুহাতে মারধর করছিলেন। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুল কতৃর্পক্ষ। তবে ওই ঘটনার পরে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্কুল সূত্রের খবর, গত শনিবার স্কুলের বাইরে এক সহপাঠীর সঙ্গে মারামারি করে শিবম। মঙ্গলবার ছিল অঙ্ক পরীক্ষা। যে ছাত্রের সঙ্গে মারপিট হয়েছিল, পরীক্ষা চলাকালীন সে অঙ্ক শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করে যে শিবম ওই দিন তাকে অশ্লীল গালিগালাজ করেছে। অভিযোগ, তা শুনেই শিবমের চুলের মুঠি ধরে মারধর শুরু করেন শিক্ষক। পাঁজরে আঘাত লাগলে যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠে ছাত্রটি বেঞ্চের উপরেই লুটিয়ে পড়ে। তার নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে। পরীক্ষাও আর শেষ করা হয়নি।
ওই ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, এর পরেও শিবমের চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে তাকে প্রধান শিক্ষকের ঘরে প্রায় এক ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। জল চাইলেও দেওয়া হয়নি। তাকে বাড়িতে ফোন করে খবর দিতে বাধা দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। পরে স্কুলের পক্ষ থেকে তার বাবা কামেশ্বর সাউকে ডেকে আনার পরে তিনি ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। বুধবার হাসপাতালে শুয়ে ছাত্রটি জানায়, ‘‘যে ছেলেটির সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়, ও কয়েক দিন ধরে অঙ্কের স্যরের কাছে টিউশনি পড়তে ভর্তি হতে বলছিল। আমি পড়ব না বলায় শনিবার ওর সঙ্গে ঝগড়া হয়।’’
পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক আর এ সিংহ বলেন, ‘‘টিউশন পড়তে না চাওয়ায় মারধরের অভিযোগ ঠিক নয়। গালিগালাজের অভিযোগ পেয়েই ওই ছাত্রকে মেরেছিলেন শিক্ষক। শিবমকে আমরাই হাসপাতালে পাঠাই। এক ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়নি।’’