New Garia Murder

‘কথা বলার অবস্থায় নেই’! নিউ গড়িয়ায় নিহত বৃদ্ধার পুত্র আনন্দবাজার ডট কমকে বললেন, নিরাপত্তার উন্নতি প্রয়োজন

সমবায়ের সূত্রে খবর, আবাসনে রক্ষী রয়েছেন। সিসি ক্যামেরাও রয়েছে। কার বাড়িতে কে কাজ করবেন, তা সমবায় স্থির করে না।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২৫ ১৫:৫৩
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

নিউ গড়িয়ার পঞ্চসায়রে নিজের বাড়িতে খুন হয়েছেন বৃদ্ধা। নিহতের মুম্বইবাসী পুত্র সৌম্যব্রত দাস আনন্দবাজার ডট কমকে জানালেন, কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে তিনি এখন নেই। তদন্তের স্বার্থে এই নিয়ে তিনি বেশি কিছু বলতেও চান না। তবে সৌম্যব্রত জানিয়েছেন, আবাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি প্রয়োজন। বৃদ্ধার খুনের পরে প্রবীণদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সমবায়ের সূত্রে খবর, আবাসনে রক্ষী রয়েছেন। সিসি ক্যামেরাও রয়েছে। কার বাড়িতে কে কাজ করবেন, তা সমবায় স্থির করে না। প্রসঙ্গত, এই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন বৃদ্ধ দম্পতির দেখভালের জন্য নিয়োগ করা আয়া এবং তাঁর পুরুষ সঙ্গী। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, শনিবারই আবাসনের সমবায়ের বৈঠক হয়েছে। সেখানে আবাসনের নিরাপত্তা কী ভাবে আরও বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

Advertisement

পঞ্চসায়র থানা এলাকার এস৩২ কুলু ভিলার বাড়ি থেকে শুক্রবার সকালে ৭৯ বছরের বিজয়া দাসের দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর হাত এবং পা বাঁধা অবস্থায় ছিল। পাশের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় বিজয়ার স্বামী ৮২ বছরের প্রশান্ত দাসকে। বৃদ্ধ দম্পতি ওই বাড়িতে একাই থাকতেন। তাঁদের কন্যা জার্মানিতে থাকেন, পুত্র মুম্বইয়ে। পুত্র সৌম্যব্রত কলকাতায় ফিরে আনন্দবাজার ডট কমকে বলেন, ‘‘খুব বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছি। কিছু বলতে চাই না। তদন্ত চলছে।’’

শুক্রবার সকালে রক্তাক্ত অবস্থা সিঁড়ির কাছ থেকে মেলে বৃদ্ধার দেহ। বৃদ্ধকে পাওয়া গিয়েছে পাশের ঘরে খাটের কাছ থেকে। পাশে পড়েছিল বালিশ। ঘটনার আকস্মিকতায় কথা বলতে পারছেন না তিনি। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বাবা কেমন রয়েছে প্রশ্ন করায় সৌম্যব্রত বলেন, ‘‘তিনি ভাল নেই।’’ ঘটনার পরে তাঁকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পুত্র জানিয়েছেন, এখন তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে আবাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। এই প্রসঙ্গে সৌম্যব্রত বলেন, ‘‘বেশি কিছু বলব না। তবে নিরাপত্তার উন্নতি প্রয়োজন।’’

Advertisement

পঞ্চসায়রের ওই আবাসনের ভিতরে পর পর একই ধাঁচের কয়েকটি দোতলা বাড়ি রয়েছে। পরিচালনায় রয়েছে সমবায়। সমবায় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই আবাসনে প্রায় ৪০০ জন বাস করেন। গোটা এলাকায় ২০ থেকে ২২টি সিসি ক্যামেরা বসানো রয়েছে। অনেকে নিজের বাড়িতেও সিসি ক্যামেরা বসিয়ে রাখেন। আবাসন পাহারার জন্য রক্ষীও রয়েছেন। যে বাড়িতে খুনের ঘটনা হয়েছে, তার পাশের বাড়ির বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পাহারাদারকে রোজ রাতে বাঁশি বাজাতে শোনা যায়। তবে বাসিন্দাদের বাড়িতে কে কাজ করবেন, তা সমবায়ের পক্ষ থেকে স্থির করা হয় না।

বৃদ্ধাকে খুনের ঘটনায় আয়া আশালতা সর্দারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর পুরুষ সঙ্গী মহম্মদ জালাল মীরকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, আয়া রাতে ওই সঙ্গীকে নিয়ে দম্পতির বাড়িতে এসেছিলেন। নিজে বাড়ির ভিতরে ঢুকেছিলেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গী বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। নিউ গড়িয়া সমবায়ের ছোট্ট ছিমছাম দোতলা বাড়িতে একাই থাকতেন বৃদ্ধ দম্পতি। প্রতি দিন সকালেই বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে আসার কথা ছিল আশালতার। নিকটবর্তী একটি আয়া সেন্টার থেকে সদ্য নিয়োগ করা হয়েছিল তাঁকে। শুক্রবার না-আসায় পুলিশের সন্দেহ হয়। তার পরেই শনিবার সকালে গ্রেফতারি।

প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, সম্পত্তি হাতানোর লোভেই এই খুন। বাড়ির আলমারি খোলা ছিল। বৃদ্ধার গায়ের গয়নাগুলিও পাওয়া যায়নি। বাড়ির সিসিটিভি-র তার কেটে দেওয়া হয়েছিল। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। শুক্রবার সকালে পরিচারিকা গিয়ে দম্পতিকে ডাকাডাকি করে সাড়া পাননি। তার পরে তিনি থানায় খবর দেন। পঞ্চসায়র থানা এই বাড়ি থেকে খুব বেশি দূরে নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, শ্বাসরোধ করে এবং মাথায় আঘাত করে বৃদ্ধাকে খুন করা হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ময়নাতদন্তের অন্তত ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা আগে। সিসিটিভিতে যে সময়ে দু’জনকে আবাসনে ঢুকতে দেখা গিয়েছে, তার সঙ্গে মৃত্যুর সময় প্রায় মিলে গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement