বিক্রম চট্টোপাধ্যায়
অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ এনে পুলিশ কমিশনারকে ফের চিঠি দেওয়ার কথা ভাবছে প্রয়াত মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের পরিবার। হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ারও ভাবনা রয়েছে তাদের। পরিজনদের অভিযোগ, সোনিকার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা বলে এক দিকে ক্যামেরার সামনে কান্নাকাটি করছেন বিক্রম। অথচ নিজের গাড়িতে দুর্ঘটনায় সোনিকার মৃত্যুর দায় এড়ানোরও চেষ্টা করছেন। নানা মহলে প্রভাব খাটিয়ে আইন থেকে পার পেতে চাইছেন এই অভিনেতা। বিক্রমের এই আচরণের কথাই পুলিশ কমিশনারকে জানাতে চায় সোনিকার পরিবার।
গত ২৮ এপ্রিল রাতে বিক্রমের গাড়িতে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মারা যান সোনিকা। গত ১৩ মে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে প্রথম চিঠিটি লেখেন সোনিকার বাবা বিজয় সিংহ চৌহান। উত্তর আসেনি। তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ বিক্রমের বিরুদ্ধে ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর মামলা করায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিল চৌহান পরিবার। কিন্তু এখন তাঁরা মনে করছেন, পুলিশ বিক্রমকে ছুঁচ্ছে না। এই অনিশ্চয়তা থেকেই হাইকোর্টে যাওয়ার ভাবনা। বিক্রমও অবশ্য হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন। সোনিকার মা-বাবার কথায়, ‘‘আমরা পুলিশের উপরে ভরসা রাখছি। হাইকোর্টে জামিনের শুনানি হলে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’’
আরও পড়ুন: রক্তদান শিবিরও কি বন্ধ কলেজ স্কোয়ারে
মেয়ের নাইট ক্লাবে যাওয়া ও তার প্রেক্ষাপট থেকে খুঁটিনাটি যা কিছু তাঁরা জেনেছিলেন, সিপিকে আগের চিঠিতে সবই লিখেছিলেন বিজয়। তাঁর অভিযোগ, সে-রাতে বিক্রম বিভিন্ন নাইট ক্লাবে নানা ধরনের মদ খান। গাড়ি চালানোর পক্ষে তা বিপজ্জনক। তিনি আরও লেখেন, ‘সোনিকা ও বিক্রমের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল কি না, তা অবান্তর। বন্ধু হিসেবে বিশ্বাস করে বিক্রমকে সোনিকা দায়িত্ব দিয়েছিল তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার। সেই বিশ্বাসের মর্যাদা বিক্রম দেননি। মদ্যপ অবস্থায় জোরে গাড়ি চালানো বিশ্বাসভঙ্গেরই নামান্তর।’
সিপিকে বিজয় লিখেছিলেন, তাঁরা প্রাপ্তবয়স্ক, স্বনির্ভর, পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল মেয়েকে বিশ্বাস করতেন। ঠাকুরদা-ঠাকুমার সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে ছুটি কাটাতে যাওয়ার আগে বেশি রাত পর্যন্ত বন্ধুদের সঙ্গে ক্লাবে কাটানোর পরিকল্পনার কথা সোনিকাই তাঁদের জানিয়েছিলেন। সোনিকার মা-ই তাঁকে মিডলটন রোয়ের নাইটক্লাবে নামিয়ে দেন। কিন্তু বন্ধুর ‘হঠকারিতা’র দাম দিতে হল সোনিকাকে। টালিগঞ্জে প্রভাবশালী কয়েক জনের সাহায্যে বিক্রম পিঠ বাঁচানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে মনে করে সোনিকার পরিবার।
গোয়েন্দাপ্রধান বিজয় গর্গ অবশ্য বিক্রমের বিরুদ্ধে কবে, কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলতে চাননি। তাঁর শুধু দাবি, ‘‘ঠিক পথেই তদন্ত এগোচ্ছে।’’