বার বার বলা সত্ত্বেও ফোন কানে পারাপার ও তার জেরে দুর্ঘটনা চলছেই। শুক্রবার রাতে তেমনই একটি ঘটনার বলি হলেন রাজ্য সরকারের ভূমি রাজস্ব দফতরের এক বরিষ্ঠ আধিকারিকের। পুলিশ জানায়, উল্টোডাঙা রেলব্রিজের উপর মোবাইলে কথা বলতে বলতে রেললাইন পার হচ্ছিলেন তিনি।
সেই সময়ে ট্রেনের ধাক্কায় তিনি সেখান থেকে পড়ে মারা যান বলে দাবি পুলিশের।
পুলিশ জানায়, লেকটাউনের বি ব্লকের বাসিন্দা রঞ্জন ত্রিবেদী (৫৩) নামে ওই আধিকারিক হুগলির জিরাটে কর্মরত ছিলেন। পূর্ব রেল জানায়, রঞ্জনবাবু রেল লাইন পেরিয়ে ২ নম্বর থেকে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে আসছিলেন। তাঁর কানে ছিল ফোন। সেই সময়েই আপ গ্যালোপিং কৃষ্ণনগর লোকালের ধাক্কায় রেলব্রিজ থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান তিনি। স্থানীয়েরা খবর দেন মানিকতলা থানায়। আর জি করে র়ঞ্জনবাবুকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পুলিশের ধারণা, ফোনে কথা বলতে গিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে পড়ায় তাঁর দিকে ছুটে আসা ট্রেনটি দেখতে পাননি রঞ্জনবাবু। রেল দুর্ঘটনাতেই রঞ্জনবাবুর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। তবে তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন থাকায় আজ, শনিবার মানিকতলা থানায়
গিয়ে ঘটনার খোঁজ নেন গোয়েন্দা শাখার আধিকারিকেরা।
রঞ্জনবাবুর শ্যালক রাজীব দুবে জানান, জামাইবাবু প্রতি দিন অফিস যাওয়ার সময়ে ব্যক্তিগত গাড়িতে উল্টোডাঙা যেতেন ট্রেন ধরার জন্য। ফেরার সময়ে ট্রেন উল্টোডাঙা পৌঁছনোর একটু আগেই বাড়িতে ফোন করে গাড়ি ডেকে নিতেন। রঞ্জনবাবুর পরিজনেরা জানান, শুক্রবার সন্ধা ৭টা ১০ মিনিট নাগাদ তিনি বাড়িতে ফোন করেছিলেন গাড়ি পাঠানোর জন্য। সেই মতো গাড়ির চালক উল্টোডাঙায় পৌঁছে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু মিনিট ৪৫ পরেও রঞ্জনবাবু না আসায় চালক বাড়িতে ফোন করে সব জানান। খোঁজ খবর শুরু করলে রাতে তাঁর মৃত্যু সংবাদ পান পরিজনেরা।
পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র জানান, রেল লাইন পারাপারের সময়ে মোবাইলে কথা বলতে নিষেধ করে সব সময় প্রচার চলে। তা সত্ত্বেও যাত্রীরা মোবাইল কানে রেললাইন পারাপার করেন। এ জন্য অনেক সময়েই রেল পুলিশ তাঁদের থেকে জরিমানাও আদায় করে। কিন্তু তা সত্ত্বেও নিত্যযাত্রীরা রেলের সঙ্গে সহযোগিতা করেন না বলে জানান ওই আধিকারিক।