যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
সেন্ট জেভিয়ার্সের মডেলে চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই রাজ্যের সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক ছাত্র সংসদের বদলে অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল তৈরির কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এই বিষয়ে সরকারি নির্দেশিকাও প্রকাশিত হয়েছে। সেই নির্দেশের প্রতিবাদে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা উপাচার্য-সহ কর্মসমিতির সদস্যদের ঘেরাও করলেন। ইঞ্জিনিয়ারিং, কলা ও বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সংসদ এবং অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার কর্মসমিতির বৈঠকে ঢুকে স্মারকলিপি দেন যাদবপুরের পড়ুয়ারা। পরে শুরু করেন অনির্দিষ্ট কালের অবস্থান। তাঁদের দাবি, এই নির্দেশ অগণতান্ত্রিক বলে ঘোষণা করুন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ।
পড়ুয়া-বিক্ষোভের সমালোচনা করে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্যের সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়েই এই নির্দেশ প্রযোজ্য। ওরা যা-ই বলুক, সরকার এই সিদ্ধান্ত বদলাবে না। এই অরাজকতা বরদাস্ত করা হবে না।’’ তিনি জানিয়ে দেন, পরিস্থিতি সামলাতে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষকে সব রকম সাহায্য করতে প্রস্তুত আছে রাজ্য সরকার।
কর্মসমিতির বৈঠক শুরু হওয়ার পরেই বিশাল মিছিল করে পড়ুয়ারা প্রশাসনিক ভবন ‘অরবিন্দ ভবন’-এ পৌঁছে যান। ওই ভবনের দেওয়ালে লিখে দেন ‘হোক ইউনিয়ন’। ঝোলানো হয় ফেস্টুন। ওই ভবনের সামনে যে-দণ্ডে জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা তোলা হয়, তাতে ‘ইউনিয়ন চাই’ লেখা এক খণ্ড কাপড় টাঙিয়ে দেওয়া হয়।
স্মারকলিপি পেয়ে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস পড়ুয়াদের জানান, তাঁদের দাবি তিনি উচ্চশিক্ষা দফতরে জানাবেন। পড়ুয়ারা তাতে নিরস্ত হননি। কলা বিভাগের ছাত্র সংসদের চেয়ারপার্সন সোমাশ্রী চৌধুরী বলেন, ‘‘এই সরকারি সিদ্ধান্ত যে চূড়ান্ত অগণতান্ত্রিক, তা নিয়ে কর্মসমিতির বিবৃতির দাবিতে আমরা অবস্থান চালিয়ে যাব।’’ সোমাশ্রীদের দাবি, তাঁরা কর্তৃপক্ষকে ঘেরাও করছেন না। তাঁরা আন্দোলনকারীদের উপর দিয়ে চলে যেতে চাইলে যাবেন।
রাজ্য ২০১৫-’১৬ শিক্ষাবর্ষে ছাত্রভোট স্থগিত রাখায় যাদবপুরের পড়ুয়ারা তারও প্রতিবাদ করেছিলেন। উপাচার্যকে টানা ৫২ ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল।