ট্যাক্সির জুলুমের শিকার অন্য ট্যাক্সিচালক

এত দিন ট্যাক্সিচালকদের বেশি ভাড়ার জুলুম সয়েছেন যাত্রীরা। দিতে রাজি না হলে প্রহৃতও হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে ফের তারই পুনরাবৃত্তি। তবে বেশি ভাড়া দিতে না চেয়ে এ দিন যে যাত্রী মার খেয়েছেন, ঘটনাচক্রে তিনি নিজেও ট্যাক্সিচালক।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:৪৩
Share:

হাসপাতালে মঞ্জুর। —নিজস্ব চিত্র।

এত দিন ট্যাক্সিচালকদের বেশি ভাড়ার জুলুম সয়েছেন যাত্রীরা। দিতে রাজি না হলে প্রহৃতও হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে ফের তারই পুনরাবৃত্তি। তবে বেশি ভাড়া দিতে না চেয়ে এ দিন যে যাত্রী মার খেয়েছেন, ঘটনাচক্রে তিনি নিজেও ট্যাক্সিচালক। মঙ্গলবার দুপুরে নোনাপুকুর ট্রামডিপোর সামনে এই ঘটনায় ট্যাক্সিচালক ও তার সহকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, রিপন স্ট্রিটের বাসিন্দা, পেশায় ট্যাক্সিচালক মহম্মদ মঞ্জুর আলম (৫১) এ দিন দুই ছেলেকে নিয়ে বেকবাগান যাওয়ার জন্য একটি ট্যাক্সিতে ওঠেন। নির্দিষ্ট ভাড়ার থেকে বেশি টাকা দাবি করেছিলেন চালক। প্রতিবাদ করেন মঞ্জুর। তার জেরেই এই ঘটনা।

হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে মঞ্জুর বলেন, ‘‘নোনাপুকুর ট্রামডিপোর সামনে হঠাৎ চালক বলে, মিটারে যা উঠবে তার থেকে ১০০ টাকা বেশি দিতে হবে। প্রতিবাদ করলে আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে।’’ তিনি বলেন, ‘‘এর পরেই একটি রড বার করে আমার মাথায় জোরে আঘাত করে চালক। আমার মাথা ফেটে যায়। ট্যাক্সিতে থাকা আর এক জনও গায়ে হাত তোলে। আমি রাস্তায় লুটিয়ে পড়ি।’’ রক্তাক্ত অবস্থায় মঞ্জুর আলমকে উদ্ধার করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। তাঁর মাথায় পাঁচটি সেলাই হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মঞ্জুরের মাথায় গুরুতর চোট রয়েছে। শুক্রবার অস্ত্রোপচার হবে।

Advertisement

সোমবার বিকেলে মঞ্জুরের পরিবার পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করে। গভীর রাতে মোমিনপুরের বাড়ি থেকে অভিযুক্ত শেখ সমীর ও বিবেক চৌধুরীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার আদালতে তাদের ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত হয়।

ট্যাক্সিচালকের উপর আক্রমণের এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন ট্যাক্সি সংগঠনের প্রতিনিধিরাও। বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিমল গুহ বলেন, ‘‘যাত্রীকে মারধরে অভিযুক্ত ট্যাক্সিচালকের শুধু জেল হলেই চলবে না। আমরা চাই, এই ধরনের ট্যাক্সিচালকের লাইসেন্স বাতিল হোক।’’ ওয়েস্টবেঙ্গল ট্যাক্সি অপারেটর্স ইউনিয়নের সম্পাদক প্রমোদ ঝা-র দাবি, মুষ্টিমেয় এমন কিছু চালকের জন্য ওলা, উবেরের বাড়বাড়ন্ত। এমন কিছু চালকদের করা উচিত নয়, যাতে হলুদ ট্যাক্সি উঠে যায়। অন্য দিকে, প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সিমেন্‌স ইউনিয়নের সম্পাদক শম্ভুনাথ দে-র কথায়, ‘‘পুরো বিষয়টি জানি না। যাত্রীকে মারধরের ঘটনা ঘটে থাকলে, তা একেবারেই ঠিক নয়। ট্যাক্সিচালকদের এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন