হারানো সেই কার্তুজ ফেরালেন ট্যাক্সিচালক

ট্যাক্সিচালকদের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যেই যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বা প্রত্যাখ্যান করার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু সব ট্যাক্সিচালকই যে তেমন নন, তা ফের প্রমাণ হল নারকেলডাঙার ঘটনায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৪৩
Share:

ট্যাক্সিচালকদের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যেই যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বা প্রত্যাখ্যান করার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু সব ট্যাক্সিচালকই যে তেমন নন, তা ফের প্রমাণ হল নারকেলডাঙার ঘটনায়। শনিবার ইনস্যাস রাইফেলের ৮০ রাউন্ড কার্তুজ ট্যাক্সিতে ফেলেই নেমে যান শিয়ালদহ রেলরক্ষী বাহিনীর কনস্টেবল অভিষেক কুমার। খোয়া যাওয়া সেই কার্তুজ রবিবার সকালে নারকেলডাঙা থানায় এসে ফেরত দিলেন ওই ট্যাক্সির চালক লক্ষ্মণ রায়। এ দিন দুপুর বারোটা নাগাদ এক পরিচিতের সঙ্গে এসে প্লাস্টিকে মোড়া গুলি ভর্তি ম্যাগাজিন বেল্টটি জমা দেন তিনি। পুলিশ ওই বেল্টটি আরপিএফের হাতে তুলে দিয়েছে।

Advertisement

কী ভাবে ওই বেল্টটি নজরে এল তাঁর? পুলিশকে লক্ষ্মণবাবু জানিয়েছেন, ট্যাক্সিটির মালিক তিনি নিজেই। কলকাতা স্টেশন থেকেই তিনি যাত্রীদের নিয়ে প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করেন। রবিবার অভিষেক কুমার এবং তাঁর সহকর্মীদের নারকেলডাঙার সাহেববাগানে নামিয়ে তিনি বাড়ি চলে যান। ট্যাক্সিটি রাতে গ্যারাজে রেখে দেন। তখন অন্ধকারে গুলির বেল্ট তাঁর নজরে পড়েনি।

রবিবার সকালে ট্যাক্সি নিয়ে বেরোনোর আগে তা মোছার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই সময়েই তাঁর নজরে আসে পিছনের সিটে পড়ে থাকা প্লাস্টিকে মোড়া ওই বেল্ট। সেটি বার করে ভিতরে অত কার্তুজ দেখে প্রথমে স্তম্ভিত হয়ে যান তিনি। কিন্তু পরে বুঝতে পারেন, শনিবার ট্যাক্সির শেষ সওয়ার আরপিএফ জওয়ানই ফেলে গিয়েছেন সেগুলি। লক্ষ্মণবাবু বলেন, ‘‘করুণাময়ীতে এসে খবরের কাগজ পড়তে গিয়ে দেখি কার্তুজ ফেলে যাওয়ার ব্যাপারটি বেরিয়েছে। কিছুটা আশঙ্কিত হয়ে পড়ি। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে দ্রুত বেল্টটি ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’’ ঘটনাটি এক বন্ধুকে জানান লক্ষ্ণণবাবু। এর পরেই দু’জনে ওই বেল্টটি নিয়ে নারকেলডাঙা থানায় জমা দেন।

Advertisement

কী ভাবে খোয়া গিয়েছিল ওই কার্তুজগুলি? পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার কলকাতা স্টেশনে ডিউটি করে অভিষেক কুমার তাঁর পাঁচ সহকর্মীর সঙ্গে ট্যাক্সিতে ওঠেন। নারকেলডাঙার সাহেববাগানে আরপিএফ ব্যারাকে এসে নামেন। তার পরেই কার্তুজ ভর্তি বেল্টটি খোয়া যাওয়ার বিষয় নজরে আসে অভিষেকবাবুর। নারকেলডাঙা থানায় অভিযোগও দায়ের করেন তিনি। পুলিশকে অভিষেকবাবু জানিয়েছিলেন, ট্যাক্সিতে বেল্টটি রেখেই নেমে পড়েছিলেন তিনি। তিনি ঘটনার কথা জানান রেল কর্তৃপক্ষকেও। তার পরেই কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে অভিষেকবাবুকে সাসপেন্ড করেন রেলকর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভোটের সময়ে বিশেষ ধরনের ওই কার্তুজগুলি খোয়া যাওয়ায় ঘুম ছুটেছিল পুলিশ এবং রেলরক্ষী বাহিনীর একাংশের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেগুলি ফেরত পাওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন তাঁরা। কলকাতা পুলিশের পক্ষ তাঁকে পুরস্কার দেওয়া কথা জানানো হয়েছে বলে জানান লক্ষ্মণবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন