calcutta News

মহিলার মৃত্যুতে কলকাতায় করোনা-আতঙ্ক

তাইল্যান্ডের নাগরিক সুরিন নাকতোই (৩২) গত ১৮ জানুয়ারি থেকে জ্বরে ভুগছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:৪২
Share:

করোনাভাইরাস-আতঙ্কে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মাস্ক পরেছেন পুলিশকর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র

‘চিনা ভাইরাস’ নিয়ে আতঙ্কের জোড়া ছবি দেখল কলকাতা। চিনের এক তরুণী ‘নোভেল করোনাভাইরাসে’ (এনসিভি) আক্রান্ত কি না, তা নিয়ে টানাপড়েন চলল রবিবার রাত থেকে প্রায় ১৫ ঘণ্টা। সোমবার সন্ধ্যায় তাতে নয়া মাত্রা যোগ করল শহরের হাসপাতালে তাইল্যান্ডের এক মহিলার মৃত্যু। শেষ পর্যন্ত অবশ্য চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের লক্ষণ নেই চিনা তরুণীর শরীরে। তাইল্যান্ডের মৃত মহিলাও ওই ভাইরাসে আক্রান্ত নন বলেই মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

তাইল্যান্ডের নাগরিক সুরিন নাকতোই (৩২) গত ১৮ জানুয়ারি থেকে জ্বরে ভুগছিলেন। তিন দিন পরে প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে রুবি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ভর্তি হওয়া মাত্র সুরিনকে ভেন্টিলেশনে দিতে হয়। এ দিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। নভেম্বরে ব্যবসার কাজে কলকাতায় এসেছিলেন সুরিন। তিনি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে তাইল্যান্ড কনস্যুলেটের মাধ্যমে তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মৃতার দেহের নমুনা নিয়ে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে, মহিলা নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে মনে হচ্ছে না। নমুনা পরীক্ষার পরে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।’’

স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, রবিবার গভীর রাতে চিনের নাগরিক আঠাশ বছরের এক তরুণীকে নিয়ে তাঁর বন্ধুরা অ্যাপোলো গ্লেনেগলস হাসপাতালে যান। পত্রপাঠ তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নেপালে এক জন আক্রান্তের খোঁজ মেলার পর থেকে স্বাস্থ্যভবন একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কিন্তু চিনা নাগরিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এমন আশঙ্কায় ঘুম ছুটে যায় স্বাস্থ্যভবনের আধিকারিকদের।

Advertisement

আরও পড়ুন: গিল্ডের মেলায় সরকারের নিয়ন্ত্রণ কেন, উঠছে প্রশ্ন

আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরিই ছিল। তড়িঘড়ি তরুণীকে সেখানে ভর্তি করানো হয়। এ দিন সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সুদানের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ, স্বাস্থ্যসচিব বিবেক কুমারের পাশাপাশি যোগ দেন দফতরের পদস্থ কর্তারা। বৈঠক শেষে আইডি হাসপাতালে যান স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পাশাপাশি এনসিভি’র মোকাবিলায় কী ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে তা পরিদর্শন করেন তিনি। এরই মধ্যে তরুণীর রোগের লক্ষণ নিয়ে কথা বলতে পুণের ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বাস্থ্য দফতর।

স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, রোগের ইতিবৃত্তান্ত জানতে গিয়ে ভাষাগত সমস্যার মুখে পড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই তরুণী ইংরেজিতে সড়গড় নন। এ দিকে তরুণীকে ভর্তি করানোর পরে তাঁর বন্ধুরাও বেপাত্তা হয়ে যান। এই পরিস্থিতিতে চিনের কনস্যুলেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। দোভাষীর খোঁজ চলে। আপাতত জানা গিয়েছে, ওই তরুণীর নাম, স্নো হুয়াইন।

হাসপাতাল সুপার আশিস মান্না জানান, মাস ছয়েক আগে বন্ধুদের সঙ্গে বিশ্ব ভ্রমণে বার হন আঠাশ বছরের এই তরুণী। ২৪ জানুয়ারি কলকাতায় পৌঁছন তিনি। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, এমন কোনও লক্ষণ নেই। তাঁর শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। আইডি’র মেডিসিন বিভাগের প্রধান তপন বিশ্বাস বলেন, ‘‘মাথাব্যথা, জ্বর এবং গায়ে র‌্যাশ নিয়ে রোগী ভর্তি হন। তাঁর তলপেটে অস্বস্তি রয়েছে, যা খাবারে বিষক্রিয়া থেকে হতে পারে।’’ তবে রোগীর যাবতীয় পরীক্ষার রিপোর্ট পুণের ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে পাঠানো হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন