ছবি ঘিরে তরজায় তৃণমূল-বিজেপি

শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে শাসকদলের বিধায়ক সুজিত বলেছিলেন, ‘‘বাবু নায়েক কিছু দিন আগে জামিন পেয়েছে। তাকে জয়ের মালা পরিয়ে এলাকায় ঢুকিয়েছে বিজেপি-র পীযূষ কানোরিয়া।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৪৬
Share:

পীযুষ কানোরিয়ার (বাঁ দিকে) সঙ্গে বাবু নায়েক। নিজস্ব চিত্র

দমদম পার্ক গুলি-কাণ্ডের পরপর ওই ঘটনার পিছনে বিজেপি যোগ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সুজিত বসু। রবিবার সেই বিজেপি যোগের অভিযোগকে জিইয়ে রেখে প্রকাশ্যে এল দু’টি ছবি। যার প্রেক্ষিতে গুলি-কাণ্ডে তরজার ধারা অব্যাহত রইল।

Advertisement

শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে শাসকদলের বিধায়ক সুজিত বলেছিলেন, ‘‘বাবু নায়েক কিছু দিন আগে জামিন পেয়েছে। তাকে জয়ের মালা পরিয়ে এলাকায় ঢুকিয়েছে বিজেপি-র পীযূষ কানোরিয়া।’’ এ দিন যে দু’টি ছবি প্রকাশ্যে এসেছে তার মধ্যে একটিতে দেখা যাচ্ছে, বাবুকে জড়িয়ে ধরে আছেন পীযূষ! সুজিত এ দিন বলেন, ‘‘বাবুর দাদা হচ্ছে রাজেশ নায়েক। সিপিএম আমল থেকে বাবু, রাজেশ, গেদু মস্তানি করছে। এখন এরা বিজেপি আশ্রিত।’’

পীযূষ পাল্টা বলেন, ‘‘ওখানে চারটে বস্তিতে প্রতি বার দোলে শিশুদের পিচকারি-রং দিই। সামাজিক অনুষ্ঠানে কেউ এসে জড়িয়ে ধরতেই পারে!’’ তাঁর দাবি, ‘‘এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বলে ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগানো হচ্ছে।’’

Advertisement

এই তরজার প্রেক্ষিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নেতাদের হাত ধরেই অপরাধ জগতে হাতেখড়ি আরতি হরিজনপল্লির বাসিন্দা রাজেশ এবং তার ভাই বাবুর। রাজেশের বাবা পুরসভার সাফাইকর্মী ছিলেন। রাজেশ নিজেও বহুতল থেকে জঞ্জাল সংগ্রহ করত। দু’হাজার সালে সে সব ছেড়ে গেদুর সংস্পর্শে আসে রাজেশ। কী ভাবে? বলা হচ্ছে, এর পিছনেও এলাকার এক রাজনৈতিক নেতার অবদান রয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। লালকুঠি থেকে গেদুকে তাড়ানো হলে সে রাজেশের এলাকায় আশ্রয় নেয়। তোলাবাজির দখল নিয়ে রাজেশ-গেদুর সঙ্গে আর এন গুহ রোডের আরও এক দুষ্কৃতী জুটি ভক্তি-মুক্তির সংঘর্ষ শুরু হতে এর পরে আর দেরি হয়নি।

এক সময়ে টাকার বখরা নিয়ে রাজেশ-গেদুর জুটি ভাঙে। সেই পর্বে ‘গ্যাংওয়ার’ শুরু হলে রাজেশের জেল হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, সেই তোলাবাজির সাম্রাজ্যের ভার নেয় বাবু ও তার বোন। অভিযোগ, বাবু জেলে গেলে সেখান থেকেই ফোন করত আর বোন প্রোমোটারদের থেকে টাকা আদায় করত। সম্প্রতি জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে অন্তত তিন জন প্রোমোটারের কাছে বাবুর ফোন গিয়েছে বলে খবর। গুলিবিদ্ধ প্রোমোটারের ঘনিষ্ঠেরা দাবি করেছেন, শেখর পোদ্দারের সহযোগী চিরদীপ রায় আগে যে নির্মাণ প্রকল্প করেছেন সেখানেও তোলার আবদার মিটিয়েছেন। প্রোমোটারদের একাংশের বক্তব্য, ক্ষমতাসীনদের হাত থাকার জন্যই দুষ্কৃতীদের এই বাড়বাড়ন্ত। তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধেও সেই অনুযোগ রয়েছে।

সুজিত বলেন, ‘‘প্রাণের ভয়ে অনেক সময় প্রোমোটারেরা টাকা দেন। পুলিশকে বলেছি, রাজনীতির রং না দেখে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। দিনেদুপুরে শান্ত পাড়ায় দুটো ছেলে কীভাবে গুলি চালিয়ে গেল তা পুলিশের দেখা দরকার। আমার দলের কেউ দুষ্কৃতীদের সঙ্গে মাখামাখি করলে নিজের দায়িত্বে করবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন