জমি-বিবাদের জের

তরুণীকে ‘হেনস্থা’য় নাম জড়াল পুরপিতার

জমি নিয়ে বিবাদের জেরে এক তরুণী ও তাঁর মাকে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে নাম জড়াল শাসক দলের এক কাউন্সিলরের। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে রিজেন্ট পার্ক এলাকার পূর্ব পুঁটিয়ারির দীনেশ পল্লিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৬ ০১:১৫
Share:

জমি নিয়ে বিবাদের জেরে এক তরুণী ও তাঁর মাকে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে নাম জড়াল শাসক দলের এক কাউন্সিলরের। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে রিজেন্ট পার্ক এলাকার পূর্ব পুঁটিয়ারির দীনেশ পল্লিতে। কাউন্সিলরের সঙ্গীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা। কাউন্সিলর জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে তিনি নিজে উপস্থিত ছিলেন। ওই তরুণী ও তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে তিনি পাল্টা মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছেন রিজেন্ট পার্ক থানায়।

Advertisement

যে কাউন্সিলরের নাম জড়িয়েছে, তিনি ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিশ্বজিৎ মণ্ডল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই তরুণী ও তাঁর পরিবার দীর্ঘ দিন ধরেই দীনেশ পল্লিতে একটি জমিতে বসবাস করেন। বছর পাঁচেক আগে তরুণী জানতে পারেন, তিনি দলিল পেয়েছেন ওই জমির নয়, পাশের একটি জমির। সেই জন্য পাশের ওই জমিতে চলে যেতে উদ্যোগী হন তিনি। তরুণীর অভিযোগ, পুরনো জমির ঘরবাড়ি ছেড়ে তিনি তাঁর নিজের জমিতে কিছু দিন ধরেই চলে যেতে চাইলেও রাজনৈতিক বাধায় সেটা হতে পারছিল না। বরং তাঁর দাবি, পুরনো জমিতেই তাঁকে থাকতে বলে নিজের জমিটি বিক্রি করার জন্য তাঁর উপরে চাপ দেওয়া হচ্ছিল।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, এর পিছনে আসলে রয়েছে প্রোমোটার-চক্রের খেলা। মহিলার প্রকৃত জমির অবস্থান ভাল, সেখানে নির্মাণ হলে স্থানীয় কয়েক জনের ভাল আয়ের সুযোগ রয়েছে। গোটা ঘটনা নিয়ে বেশ
কিছু দিন যাবৎ ওই তল্লাটে চাপান-উতোর চলছিল।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বেলা ১২টা নাগাদ ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ মণ্ডল সেই ফাঁকা জমিতে লোকজন নিয়ে গিয়ে ওই তরুণী ও তাঁর বাড়ির লোকজনকে ডেকে পাঠান। তরুণীর অভিযোগ, কাউন্সিলরের সামনেই তাঁর সঙ্গীরা তাঁদের মারধর ও শ্লীলতাহানি করে। ওই তরুণী আরও অভিযোগ করেন, ‘‘ঘটনার পরে আমি যখন হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়েছি, তখনও কাউন্সিলরের প্ররোচনায় আমার বাবাকে থানায় তুলে এনে জিজ্ঞাসাবাদের নামে হেনস্থা করা হয়েছে।’’

যদিও তরুণীর অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ দাবি করেছে, ওই মহিলার বাবাকে মোটেই হেনস্থা করা হয়নি। ঘটনাটি সম্পর্কে জানার জন্যই তাঁকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল।

আবার তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, ওই মহিলাকে মোটেই মারধর করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘ওই মহিলা অন্যের জমিতে জবরদখল করে রয়েছেন। বার বার বলা সত্ত্বেও নিজের জমির দখল নিচ্ছেন না।’’ সেই সঙ্গে বিশ্বজিৎবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমি মিটমাট করাতে ওঁকে ডেকেছিলাম। উল্টে আমারই গায়ে হাত তুললেন ওই মহিলা ও তাঁর মা।’’ কাউন্সিলরের বক্তব্য, ফেলে রাখা ফাঁকা জমিতে জল জমে মশার লার্ভা জন্মাচ্ছে।
ফলে এলাকায় মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে।

দু’পক্ষের অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দু’টি মামলা রুজু করেছে। একটি ওই তরুণী ও তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে। অন্যটি কাউন্সিলরের তিন সঙ্গীর বিরুদ্ধে। তবে রবিবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন