প্রায় ছ’দশক পরে লাভের মুখ দেখেছিল সংস্থা। শতাব্দীপ্রাচীন সেই বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালের (বিসিপিএল) তরফে পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছিল, তাদের বিভিন্ন পণ্যের নকল ছেয়ে গিয়েছে শহরের বিভিন্ন বাজারে। যা অনেক সস্তায় বিক্রি করা হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ সৈয়দ এবং মহম্মদ গুলাম। দু’জনেই হাওড়ার বাসিন্দা। সোমবার রাতে হেয়ার স্ট্রিট থানা এলাকার ক্যানিং স্ট্রিট থেকে ওই দু’জনকে ধরেন কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের গোয়েন্দারা। পাশাপাশি, ধৃতদের নিয়ে একটি গুদামে তল্লাশি চালিয়ে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশো কেজি জাল ন্যাপথালিন।
বাঙালিকে ব্যবসামুখী করতে ১৯০১ সালে ওই সংস্থার গোড়াপত্তন হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ছ’দশকের বেশি সময় সংস্থা লাভের মুখ দেখেনি। ছবিটা বদলে যায় ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে। প্রায় ৪ কোটি টাকা লাভ করে বিসিপিএল।
সম্প্রতি সংস্থার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার তপন চক্রবর্তী পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেন, তাঁদের সংস্থার নাম ভাঙিয়ে সুগন্ধী—অগরু, মাথার তেল—ক্যান্থারাইডিন, কীটনাশক ন্যাপথালিন ইত্যাদির নকল বড়বাজার-সহ বিভিন্ন জায়গায় অনেক কম দামে বিক্রি হচ্ছে। এর ফলে বেঙ্গল কেমিক্যালের ব্যবসা কমপক্ষে ২০ শতাংশ মার খাচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে সংস্থার একটি অংশের তরফে। এর পরেই সোমবার রাতে ক্যানিং স্ট্রিটের ওই দোকানে হানা দেন গোয়েন্দারা। জাল এবং নকল দ্রব্য বিক্রি করার অভিযোগে ধরা হয় মহম্মদ সৈয়দ এবং মহম্মদ গুলামকে।
পুলিশ ও সংস্থা সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, তদন্তে নেমে দেখা যায়, ক্রেতাদের চোখকে ফাঁকি দিতে নকল পণ্যের প্যাকেটের গায়ে ওই সংস্থার মূল নামের সঙ্গে নতুন কোনও শব্দ জুড়ে বা সামান্য হেরফের করে লেবেল লাগিয়ে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছিল। প্রাথমিক তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, মূলত হাওড়া-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ওই জাল দ্রব্যাদি তৈরি করা হচ্ছে। লালবাজারের এক কর্তা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই ওই সব নকল জিনিসে ছেয়ে গিয়েছে শহরের বাজার। সেগুলি কোথায় তৈরি হতো, তার তালিকা তৈরি করে ওই সব অঞ্চলে অভিযান চালানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।