জ্বলন্ত ঘরে বন্দি হয়ে জখম দুই

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অগ্নিদগ্ধ ওই যুবকদের নাম রতন রাউত (৪৮) এবং প্রকাশ রাউত (২৯)। তাঁদের প্রথমে নিউ টাউনের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০২:২৭
Share:

ছারখার: এ ভাবেই পুড়ে গিয়েছে ঘরের জিনিসপত্র। বৃহস্পতিবার, রঘুনাথপুরের আবাসনে। নিজস্ব চিত্র

ভোরে বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল বহুতলের আবাসিকদের। আবাসনের নীচে নেমে তাঁরা দেখেন, মূল দরজার ঠিক পাশের একটি ছোট ঘরে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। ঘরের ভিতরে আটকে রয়েছেন সেখানকার ভাড়াটে দুই যুবক। তাঁরা ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছেন। কোনও রকমে তাঁদের যখন উদ্ধার করা হল, তত ক্ষণে দুই যুবক আগুনে পুড়ে ভাল রকম জখম হয়েছেন। পুড়ে গিয়েছে ঘরের আসবাবপত্রও। পরে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটনাটি ঘটেছে, বৃহস্পতিবার ভোরে বাগুইআটি থানা এলাকার রঘুনাথপুরের একটি আবাসনে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অগ্নিদগ্ধ ওই যুবকদের নাম রতন রাউত (৪৮) এবং প্রকাশ রাউত (২৯)। তাঁদের প্রথমে নিউ টাউনের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাঁদের এম আর বাঙুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ ও দমকলের অনুমান, ওই দুই যুবক যে ঘরে ছিলেন, সেখানে রাখা গ্যাস সিলিন্ডার লিক করেই কোনও ভাবে আগুন ধরে যায়। রতন ও প্রকাশ কলের মিস্ত্রি ছিলেন। তাঁদের বাড়ি ওড়িশায়। ওই আবাসনের বেসমেন্টে একটি ছোট ঘরে দু’জনে ভাড়া থাকতেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ শুধু বিস্ফোরণের আওয়াজই নয়, সেই সঙ্গে গোটা আবাসন কালো ধোঁয়ায় ভরে যায়। ওই আবাসনের এক বাসিন্দা মনোমিতা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা কোনও রকমে নীচে নেমে এসে দেখি রতনদের ঘরটা দাউদাউ করে জ্বলছে। ওরা বাইরে

Advertisement

বেরোতে পারছিল না। কারণ দরজা ভিতর থেকে তালা বন্ধ ছিল। ওরা প্রথমে চাবি খুঁজে পাচ্ছিল না।’’ আবাসনের বাসিন্দারা জানান, ভিতর থেকে দু’জনকে উদ্ধার করতে যখন তাঁরা দরজা ভেঙে ফেলতে যাচ্ছেন, তখন ওই দুই মিস্ত্রি চাবি খুঁজে পান। চাবি খুলে দরজা দিয়ে যত ক্ষণে বেরিয়েছেন, তত ক্ষণে তাঁদের শরীরের বেশ কিছুটা অংশ পুড়ে গিয়েছে।

আবাসনের এক স্থানীয় বাসিন্দা দেবব্রত চন্দ জানান, যে ঘরে আগুন ধরেছে সেটির ঠিক পাশেই তাঁর গ্যারাজ। সেখানে তাঁর গাড়িও রয়েছে। দেবব্রতবাবু বলেন, ‘‘আগুন উপরের তলায় ছড়িয়ে পড়লে মারাত্মক ঘটনা ঘটতে পারত। প্রত্যেক ঘরেই সিলিন্ডার রয়েছে। সেই সিলিন্ডার ফাটলে কী হতে পারত সেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আবাসিকদের মধ্যে।’’

দেবব্রতবাবু জানান, আগুন গ্যারাজে ছড়িয়ে গেলে গাড়ি পুড়ে যেতে পারে। এই আতঙ্কে গ্যারাজের শাটার ভেঙে ফেলা হয়। অন্য এক আবাসিক জানান, আগুনের হলকায় আবাসনের একতলার একটি জানলার কাচ ভেঙে যায়। কয়েক জন আবাসিক জানান, আগুন না ছড়ালেও প্রচুর পরিমাণে কালো ধোঁয়া আবাসনের ফ্ল্যাটের ভিতরে ঢুকে যাওয়ায় অনেকের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। আবাসনের বৃদ্ধ ও অসুস্থ আবাসিকদের দ্রুত বাইরে বার করতে সাহায্য করেন অন্য আবাসিকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement