কলকাতার বুকে ফের একটি বাড়ি থেকে বৃদ্ধ দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার হল। বৃহস্পতিবার মাঝরাতে জোড়াবাগান থানা এলাকার আহিরীটোলায় ওই বৃদ্ধ দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
তবে প্রাথমিক ভাবে ঘটনায় খুনের কোনও প্রমাণ না মেলায় এই ঘটনাকে সুইসাইড বলেই মনে করছে পুলিশ। ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট-ও। তা থেকে পুলিশের অনুমান, আর্থিক অনটন এবং শারীরিক অসুস্থতার জেরে তাঁরা আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে রাত ১২ টা নাগাদ বাড়ি থেকে দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ায় প্রতিবেশীদের মধ্যেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। একই সঙ্গে শহরের বুকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের অসহায়তা যে ক্রমশ বাড়ছে তা ফের সামনে নিয়ে এসেছে এই ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত দম্পতি হলেন সুনীলকুমার সাউ (৮৭) এবং শেফালি সাউ (৭৭)। তাঁরা আহিরীটোলার নিমু গোস্বামী লেনের বাসিন্দা। তাঁদের একমাত্র ছেলে ২০০৮ সাল থেকে নিখোঁজ। তার পর থেকে তাঁরা নাতনির সঙ্গে এই বাড়িতেই থাকতেন। তবে নাতনি থাকলেও ছেলেকে হারানোর পর থেকেই ক্রমশ গুটিয়ে আসছিলেন ওই দম্পতি। নিঃসঙ্গতা, অসহায়তা এবং একই সঙ্গে আর্থিক দুরবস্থা তাঁদেরকে ক্রমশ গ্রাস করছিল। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে মনোবল হারিয়ে সেগুলিকে নিয়ে তাঁরা আর হয়তো চলতে পারছিলেন না। সে কারণেই সুইসাইডের পথ বেছে নিয়েছেন বলে মনে করছেন প্রতিবেশীরা।
কী হয়েছিল এ দিন?
পুলিশ জানায়, ওই দিন তাঁদের নাতনি বিকেল ৫টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়ি ফিরে দেখেন সুনীলবাবুরা ঘরের মেঝে চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে রয়েছেন। ডাকাডাকিতেও সাড়া মেলেনি তাঁদের। পুলিশে খবর দেন তিনি। তাঁদেরকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, দম্পতির দেহে আঘাতের কোনও চিহ্ন মেলেনি। কী ভাবে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতদন্তের পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে নাতনিকেও।