মধ্যরাতে গাড়ি ভাঙচুর

রাস্তার একপাশে পার্কিংয়ে সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে। বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটের হরিশ মুখার্জি রোড। সুনসান পাড়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৭ ০১:২১
Share:

প্রতীকী ছবি।

রাস্তার একপাশে পার্কিংয়ে সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে। বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটের হরিশ মুখার্জি রোড। সুনসান পাড়া। হঠাৎই বিকট শব্দ শুরু হল ভাঙচুরের। কয়েক জন বেরিয়ে দেখলেন, পাড়ার এক যুবক লোহার রড মেরে গাড়ির কাচ ভাঙছেন।

Advertisement

পুলিশ জানায়, বছর বিয়াল্লিশের ওই যুবকের নাম প্রতাপ গুপ্ত। তাঁকে ওই রকম করতে দেখে বাসিন্দাদের একাংশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পুলিশ ওই যুবককে ধরতে গেলে প্রথমে তিনি নিজের বাড়িতে ঢুকে কুকুর লেলিয়ে দেন। পরে বাড়ির ছাদ থেকে অন্য বাড়ির ছাদে লাফিয়ে পালাতে গিয়ে পড়ে যান। তাঁর চোট লাগে। তখন পুলিশ তাঁকে ধরে ফেলে। ওই যুবকের বিরুদ্ধে কালীঘাট থানার পুলিশ ভাঙচুর, মারধর ও কর্তব্যরত সরকারি কর্মীকে বাধাদানের অভিযোগে মামলা রুজু করেছে। পুলিশ জানায়, মত্ত অবস্থায় প্রতাপ গাড়ি ভাঙছিলেন।

হরিশ মুখার্জি রোড ও নন্দন রোডের মোড়ে ওই ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রতাপের প্রতিবেশী দেবাশিস দে বলেন, ‘‘ভাঙচুরের শব্দে ঘুম ভেঙে গেলে বাইরে বেরিয়ে দেখি, পাশের বাড়ির প্রতাপ লোহার রড নিয়ে একটার পর একটা গাড়ির কাচ ভাঙছে। তখন আমি চেঁচিয়ে উঠি।’’

Advertisement

তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন বেরিয়ে প্রতাপকে ধরার চেষ্টা করেন। ততক্ষণে পুলিশও হাজির হয়। পুলিশ দেখেই প্রতাপ বাড়িতে ঢুকে বাড়ির একটি কুকুরকে লেলিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। দেবাশিসবাবুর দাবি, ‘‘প্রতাপ প্রায়ই মত্ত অবস্থায় আশপাশের বাড়ির দরজায় রড দিয়ে মারেন ও কটূক্তি করেন। বৃহস্পতিবার রাতে আমার বাড়ির দরজাতেও রড দিয়ে মেরেছিল।’’

শুক্রবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা অবস্থায় একটি ট্যাক্সি-সহ ন’টি গাড়ি দাঁড়ানো। প্রতাপের বাড়ি তালাবন্ধ। বাড়িতে প্রতাপ তাঁর মা-বাবা, স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে থাকেন বলে প্রতিবেশীরা জানান। বছর আটেক আগে তাঁরা সেখানে একটি দোতলা বাড়ি কিনে বসবাস শুরু করেন। কারও ঋণের দরকার হলে ব্যাঙ্ক থেকে সেটা তাঁকে পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা ও ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে ব্যাঙ্কের টাকা উদ্ধার করা থেকে প্রতাপের রোজগার হয়।

মিতা বোথরা নামে এলাকার এক বাসিন্দা জানান, এই ঘটনায় তাঁর গা়ড়িরও ক্ষতি হয়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘প্রতাপ মত্ত অবস্থায় এই ধরনের আচরণ প্রায়ই করে। ৩০ মার্চ আমাদের বাড়ির তিনটি গাড়ি সে ভেঙেছিল।’’ এলাকার আরও কয়েক জন বাসিন্দার অভিযোগ, প্রতাপ আগে এই ধরনের কাজ করলেও পুলিশ পুলিশ এত দিন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশের বক্তব্য, কয়েক জন বাসিন্দা এক বার গাড়ি ভাঙার অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে অভি‌যুক্ত হিসেবে কারও নাম ছিল না। বৃহস্পতিবার স্থানীয়েরা জেগে যাওয়ায় তাঁদের উদ্যোগে প্রতাপকে ধরা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন