Vidyasagar Setu

টানা ১৬ ঘণ্টার জন্য আবার বন্ধ বিদ্যাসাগর সেতু! বারংবার কেন যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে এই সেতুতে? কী কাজ চলছে?

মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য রবিবারও ১৬ ঘণ্টা বিদ্যাসাগর সেতুতে বন্ধ যান চলাচল। বিজ্ঞপ্তি জারি করে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৫৭
Share:

বিদ্যাসাগর সেতু। —ফাইল চিত্র।

মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য রবিবারও ১৬ ঘণ্টা বিদ্যাসাগর সেতু (দ্বিতীয় হুগলি সেতু)-তে বন্ধ যান চলাচল। বিজ্ঞপ্তি জারি করে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। কেন বার বার যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ, আনন্দবাজার ডট কম তার খোঁজ নিল।

Advertisement

গত অগস্ট মাস থেকে প্রায় প্রতি সপ্তাহান্তেই বিদ্যাসাগর সেতুতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতে, অর্থাৎ সোম থেকে শুক্রবার পর্যন্ত এই সেতুতে যানবাহন চাপ বেশি থাকে। দিনে অন্তত এক লক্ষ গাড়ি যাওয়া-আসা করে এই সেতু দিয়ে। তা নজরে রেখেই সেতু সংস্কারের কাজের জন্য সপ্তাহান্ত বেছে নেওয়া হয়েছে। কোনও সপ্তাহে শুধু রবিবার দিনের বেলার একটা বড় সময়, আবার কোনও সপ্তাহে শনি এবং রবিবার মিলিয়ে অন্তত ১৬-১৭ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয় সেতু। তার জন্য কলকাতা পুলিশ এবং হাওড়া পুলিশ বিকল্প রুটের ব্যবস্থাও করে।

১৯৯২ সালে প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাও এই বিদ্যাসাগর সেতু উদ্বোধন করেছিলেন। তখন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, উদ্বোধনের পর থেকে সেতু রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হলেও, সেতুর ঝুলন্ত কেব্‌ল বদলানোর কাজ কখনও হয়নি। এ বার সেই কাজই শুরু হয়েছে।

Advertisement

বিদ্যাসাগর সেতুকে ধরে রেখেছে মোট ১৫২টি কেব্‌ল। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত প্রথম পর্যায়ে ১৯টি কেব্‌ল বদলানোর পরিকল্পনা হয়েছে। সেইমতোই কাজ চলছে। প্রতিটি কেব্‌ল বদলাতে প্রায় এক মাস সময় লেগে যায়। স্থির হয়েছে, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালের ৩১ মে-র ম‌ধ্যে পর্যায়ের কাজ শেষ করা হবে। তবে এই সময়সীমা প্রয়োজনে বাড়ানোও হতে পারে। কেব্‌ল বদলানোর প্রথম পর্যায়ের এই কাজের জন্য ব্যয় করা হবে ২৫০ কোটি টাকা।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সম্প্রতি বিদেশে বিদ্যাসাগর সেতুর মতো একটি সেতু ভেঙে পড়েছিল। তার পর থেকেই বিদ্যাসাগর সেতুর কেব্‌ল পরীক্ষা এবং মেরামতি নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়। তা ছাড়া এমনিতেই সেতুর বয়স ২৫ বছরের বেশি হয়ে গিয়েছে। এ সব বিষয় নজরে রেখেই সেতু পরিদর্শন শুরু করে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (এইচআরবিসি)। তার পরেই কেবল প্রথম পর্যায়ে ১৯টি কেব্‌ল বদলানোর সিদ্ধান্ত হয়। একটি জার্মান সংস্থা এই সেতু নির্মাণ করেছিল। ২০১৩ সালে তারাও সেতু পরিদর্শন করে। তাদের রিপোর্টকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সাম্প্রতিক সংস্কারের কাজে।

এখন কলকাতা এবং ফ্রান্সের দু’টি সংস্থা যৌথ ভাবে বিদ্যাসাগর সেতু সংস্কারের কাজ করছে। ফ্রান্সের সংস্থায় দক্ষিণ আফ্রিকা এবং স্পেনের বিশেষজ্ঞেরা রয়েছেন। তাঁরা নিয়মমাফিক সেতু পরিদর্শন করছেন। বিদেশ থেকে মেশিন এবং নির্মাণ সামগ্রী আনা হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ১৬টি হোল্ডিং কেব্‌ল মেরামতির কাজ হয়ে গিয়েছে। খরচও হয়ে গিয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।

বিদ্যাসাগর সেতু সংস্কারের কাজের জন্য বিকল্প রাস্তা বাতলে দিয়েছে পুলিশ। লালবাজার জানিয়েছে—

১। জ়িরাট আইল্যান্ড থেকে এজেসি বোস রোড দিয়ে যে সমস্ত গা়ড়ি আসবে, সেগুলিকে টার্ফ ভিউ দিয়ে হেস্টিংস ক্রসিংয়ের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। সেন্ট জর্জেস গেট রোড, স্ট্র্যান্ড রোড হয়ে ওই সমস্ত গা়ড়ি হাওড়া ব্রিজ ধরতে পারবে। হেস্টিংস ক্রসিং দিয়ে ডান দিকে ঘুরে কেপি রোডের দিকেও যাওয়া যাবে।

২। জেএন আইল্যান্ডের দিক থেকে কেপি রোড হয়ে যে সমস্ত গা়ড়ি আসবে, সেগুলিকে ১১ ফারলং গেট দিয়ে হেস্টিংস ক্রসিংয়ের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।

৩। সিজিআর রোড দিয়ে খিদিরপুরের দিক থেকে আসা গাড়িগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে হেস্টিংস ক্রসিং দিয়ে বাঁ দিকে।

৪। কেপি রোডের সমস্ত গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হবে ওয়াই পয়েন্ট দিয়ে ১১ ফারলং গেটের দিকে। সেখান থেকে রেড রোড ধরে হাওড়া ব্রিজে যাওয়া যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement